পটিয়ার জরাজীর্ণ টাঙ্গাপুল পরিদর্শনে এলজিইডি’র সামাজিক সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ দল

1

পটিয়া প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের পটিয়া ও আনোয়ারা উপজেলার সংযোগস্থল টাঙ্গাপুল ব্রিজ এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর “ফিজিবিলিটি স্টাডি এন্ড প্রিপারেশন অফ সাসটেইনেবল এন্ড ইন্ট্রিগ্রেটেড রুরাল ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের অধীনে কর্মরত জুনিয়র সামাজিক সুরক্ষা বিশেষজ্ঞগণ। প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজের আওতায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন দুর্গম ও অনুন্নত এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে পটিয়ার আশিয়া ইউনিয়নের বাথুয়া এলাকার শতবছরের পুরনো জরাজীর্ণ টাঙ্গাপুল এলাকায় আরেকটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করা হয়।
বুধবার দুপুরে জরাজীর্ণ টাঙ্গাপুল ব্রিজটি উপজেলা প্রকৌশলী কমল কান্তি পালের নেতৃত্বে পরিদর্শনে আসেন প্রতিনিধি দলের মো. কবিরুল ইসলাম, মুক্তা সাহা রায় ও রবিউল ইসলাম।
পরিদর্শনের মূল উদ্দেশ্য ছিল, টাঙ্গাপুল ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার সামাজিক ও পরিবেশগত প্রেক্ষাপট মূল্যায়ন এবং এটি ভবিষ্যতে টেকসই যোগাযোগ অবকাঠামো হিসেবে উন্নয়নের সম্ভাব্যতা যাচাই করা। টাঙ্গাপুল ব্রিজ পটিয়ার আশিয়া ইউনিয়ন এবং আনোয়ারার পরৈকোড়া ইউনিয়নের মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই সেতু ব্যবহার করে হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসা সেবা নিতে যাতায়াত করে। কিন্তু বর্তমান ব্রিজটি পুরনো ও সংকীর্ণ হওয়ায় বর্ষাকালে চলাচলে ব্যাপক দুর্ভোগ দেখা দেয়।
এসময় জুনিয়র সামাজিক সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ দল এ প্রকল্পের সামাজিক প্রভাব, পরিবেশগত টেকসই এবং স্থানীয় স¤প্রদায়ের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে এর সম্ভাব্য অবদান পর্যালোচনা করছে। এ পরিদর্শনের মাধ্যমে প্রকল্পের কার্যকারিতা, বাস্তবায়নের সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ এবং স্থানীয় জনগণের মতামত বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা প্রকল্প এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন এবং তাদের প্রয়োজনীয়তা ও প্রত্যাশা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছেন।
মুক্তা সাহা রায় বলেন, নারী, শিশু, ও বৃদ্ধদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে হলে টেকসই অবকাঠামো প্রয়োজন। স্থানীয়দের অভিজ্ঞতা শুনে প্রকল্প পরিকল্পনায় মানবিক উপাদানগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, বর্তমান পরিদর্শনের তথ্য ও স্থানীয়দেও মতামতের ভিত্তিতে নকশা প্রণয়ন, বাজেট বরাদ্দ এবং পরিবেশগত মূল্যায়নের কাজ দ্রæত শুরু হবে।
উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী কমল কান্তি পাল বলেন, খুব শীগ্রই বিশেষজ্ঞ দল তাদের পর্যেবক্ষণ ও সুপারিশ প্রতিবেদন আকারে এলজিইডিইর কাছে জমা দেবে। প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে গ্রামীণ পরিবহন ব্যবস্থায় একটি টেকসই ও সমন্বিত মডেল প্রতিষ্ঠিত হবে, যা স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।
এদিকে আশিয়া ও পরৈকোড়া ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এই ব্রিজ না থাকলে আমাদের বিকল্প কোনো নিরাপদ রাস্তাও নেই। এটি নতুন করে নির্মিত হলে কৃষক, শ্রমিক, ছাত্রছাত্রী, এমনকি রোগীদেরও জীবন অনেক সহজ হবে। স্থানীয়রা শতবছরের পুরনো টাঙ্গাপুল ব্রিজটি উন্নয়নের জন্য এলজিইডি’র কার্যক্রমকে স্বাগত জানান।
টাঙ্গাপুল ব্রিজ এলাকা পরিদর্শন মানবিক ও সামাজিক দিক বিবেচনায় নিয়েই গ্রামীণ উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে এলজিইডি। এ ব্রিজ উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হলে এটি চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রান্সপোর্ট করিডোরে পরিণত হবে। প্রকল্পটি কৃষি পণ্য পরিবহন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবায় প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, গত গত ১৫ জুন “পটিয়ার শতবর্ষী টাঙ্গাপুল সেতুর বেহাল দশা” শিরোনামে শেষ পৃষ্ঠায় ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হয় দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায়। এরপর থেকেই এলজিইডির পরিদর্শন সরজমিন পরিদর্শন করছেন।