পটিয়ার কাসেম চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পরোয়ানা

1

পটিয়া প্রতিনিধি

পটিয়ায় বিস্ফোরক ও হত্যা চেষ্টা মামলায় কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের বিতর্কিত সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত চট্টগ্রাম।
গতকাল বুধবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্বশরীরে এ আসামি হাজির না হয়ে ৭ম বারের মতো সময়ের আবেদন করলে আদালতের বিচারক নুরুল ইসলাম মানিক আসামি আবুল কাশেমের সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ফোরকানুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী ফোরকানুল ইসলাম বলেন, পটিয়ার বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টাসহ ২টি পৃথক মামলায় পলাতক আসামি আবুল কাশেম চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বুধবার আসামি কাসেম চেয়ারম্যান আদালতে স্বশরীরে হাজির না হয়ে ৭য় বারের মতো সময়ের আবেদন করলে আদালত তার আবেদন নামঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার আদেশ দেন।
এদিকে, গত বছরের ২৯ অক্টোবর উপজেলার কাশিয়াইশ ইউনিয়নের বুধপুরা এলাকার ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বাদি হয়ে পটিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। সে মামলায় প্রধান আসামি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক হুইপ ও পটিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীসহ ১২১ জনের বিরুদ্ধে এজহারভুক্ত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এতে আরো ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মামলায় হুইপপুত্র নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, হুইপের দুই ছোট ভাই ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বত, মুজিবুল হক চৌধুরী নবাব, কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়করম্যান আবুল কাশেম, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম সামশুজ্জামান চৌধুরী, মোজাম্মেল হক রাজধন, নুরুল হুদা, এমরান, যুবলীগ নেতা সাইফুল হাসান টিটু, মহিম, বাবর, জাবেদ সরওয়ার, কায়ছার, সাদ্দাম, সাইফুজ্জামান মানিক, আব্বাস উদ্দিন ছোটন, ছাত্রলীগ নেতা কপিল উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, পটিয়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর সরওয়ার কামাল রাজিব, গিয়াস উদ্দিন আজাদ, ইঞ্জি. রুপক কুমার সেনসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া ২১ আসামিকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছিল।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আসামিরা ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে নিরীহ ব্যক্তিদের কাছে চাঁদা দাবি করে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছে। পরে গত বছরের ১১ অক্টোবর রাত ৮ টার দিকে ১-৩নং আসামিদের নির্দেশে ৪-১৮নং আসামিরা যুবদল ও ছাত্রদল নেতাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এতে বাদি সাদ্দাম হোসেনসহ যুবদল নেতা আবুল হাসান, জাফর আহমদ, মো. রাসেল, মো. ফোরকান, সাইফুদ্দিনসহ অনেকেই আহত হয়। ১৯-১২১নং আসামিরা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘আর নয় প্রতিরোধ, এবার হবে প্রতিশোধথসহ বিভিন্ন উস্কানিমূলক স্লোগান দিতে দিতে এলোপাতাড়িভাবে ককটেল বিস্ফোরণ করে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করে। এ সময় চট্টগ্রাম-পটিয়া-কক্সবাজার মহাসড়কের শান্তির হাট এলাকায় আসামিরা বাদি ও ভিকটিমদের হত্যার উদ্দেশে লোহার রড দিয়ে মারধর করে। এসময় আসামিরা ভয় দেখিয়ে শান্তিরহাটের বিভিন্ন দোকান বন্ধের চাপ সৃষ্টি করে এবং প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দেয়। পরে বাদিসহ আহতরা প্রথমে শান্তিরহাট জেনারেল হাসপাতাল ও পটিয়া জেনারেল হাসপাতালেসহ বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন বলে মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়।
অপরদিকে, গত বছরের ১ নভেম্বর পটিয়ায় এক প্রবাসীর দায়ের করা বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামি হন মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এবং সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. শাহাজান বাদি হয়ে পটিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ১৮০ জনকে এজহারভুক্ত আসামি এবং আরও অজ্ঞাত ৬০-৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এবারও মামলা থেকে রেহাই পাননি ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, পৌর মেয়র, কাউন্সিলর, উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সেই মামলায়ও কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক বিতর্কিত চেয়ারম্যান আবুল কাশেম আসামি হন।