পটিয়া প্রতিনিধি
পটিয়ায় মহানবীকে (সা.) কটূক্তি করে পোস্ট দেয়ায় পার্থ বিশ্বাস পিন্টু (২২) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে নগরীর সদরঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি আইনে আরো একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আটক পার্থ পটিয়া উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের কুরাংগিরি এলাকার বাসিন্দা সুমন বিশ্বাসের পুত্র। তাকে আটকের খবরে পটিয়া জামেয়া মাদ্রাসার ছাত্ররা বিচারের দাবিতে থানার সামনে বিক্ষোভ করেন। এসময় বিক্ষোভ মিছিল থেকে পটিয়া সেনাক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজর তাইজের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হলে গাড়িতে থাকা তার ভাই ও শিশুপুত্র আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। গতকাল সোমবার বিকাল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পার্থ বিশ্বাস গত রবিবার তার ফেসবুক পেজ থেকে মহানবীকে (সা.) কটূক্তি করে একটি পোস্ট দেয়। ওই পোস্টকে কেন্দ্র করে রবিবার থেকে পটিয়ায় চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গতকাল সোমবার দুপুরে পার্থকে নগরী থেকে আটক করে পটিয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে আটকের খবরে পটিয়া থানার সামনে জনতার ভিড় বাড়তে থাকে। এ সময় বিক্ষুব্দ জনতা থানা ঘেরাও করে রাখে।বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ আটক পার্থকে বিচারের জন্য তাদের কাছে তুলে দেয়ারও আহবান জানায়। এ পরিস্থিতিতে পার্থকে গোপনে নগরীর ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। এক পর্যায়ে অতি উৎসাহী একদল লোক থানার পাশে অবস্থিত একটি হিন্দু মন্দিরে হামলার চেষ্টা করে। এসময় পটিয়া সেনাক্যাম্পের মেজর তাইজ মন্দিরের সামনে অবস্থান নেন। তখন গুজব ছাড়ানো হয় বিক্ষোভকারী ছাত্রকে সেনাবাহিনী গাড়িতে তুলে দিয়েছে। ওই গুজবে সেখানে মেজর তাইজের গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এ সময় মেজরের ছোট ভাই ও শিশুপুত্র আহত হয়। এ ঘটনায় পটিয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা মোতায়েন করা হয়।
এ বিষয়ে পটিয়া জামায়াতে ইসলামী ও পটিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সেনাবাহিনীর গাড়িতে হামলা ও মন্দিরে হামলার চেষ্টায় তারা জড়িত নয় বলে দাবি করেন। তারা বলেন, তৃতীয় পক্ষ বিক্ষোভে প্রবেশ করে উস্কানী দেয় এবং তারাই এসব হামলার সাথে জড়িত।
চট্টগ্রাম জেলার এডিশনাল এসপি (ক্রাইম) মোহাম্মদ আসাদুজ্জমান ও এডিশনাল এসপি (পটিয়া সার্কেল) আরিফুল ইসলাম জানান, সেনাবাহিনীর গাড়িতে হামলা ও মন্দিরে হামলার চেষ্টাকারীরা কেউ ছাত্র নয়। তাদের শনাক্ত করতে বিভিন্ন ভিডিও, ছবি এবং সিসিটিবি ক্যামরা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
পটিয়া থানার ওসি জানান, মহানবীকে (সা.) কটূক্তি করার ঘটনায় পটিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডস্থ খন্দকার পাড়ার বাসিন্দা নুরুচ্ছফার পুত্র মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় প্রার্থকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।