মহেশখালী প্রতিনিধি
সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে গভীর সাগরে ফিশিং ট্রলার দিয়ে অবৈধভাবে মাছ আহরণকালে ১০৩ জন জেলেকে আটক করেছে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী। আটককৃত ট্রলারগুলোতে তল্লাশি চালিয়ে ১৩ হাজার ৫০০ পিস ইলিশ, অন্যান্য প্রজাতির মাছ ৮৫ কেজি এবং ৪.৫৫ লক্ষ মিটার জাল জব্দ করা হয়। এসবের আনুমানিক বাজার মূল্য ১০ কোটি ১৬ লক্ষ টাকার অধিক। গত বুধবার কক্সবাজারের মহেশখালীতে পরিচালিত বিশেষ অভিযানে জেলেদের আটক ও বিপুল মাছ-জালসহ মাছ ধরার সরঞ্জামগুলো জব্দ করা হয়।
আটককৃত জেলেরা ভোলা এবং হাতিয়া এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। জব্দকৃত ইলিশ ও জালসহ জেলেদের বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড স্টেশন মহেশখালীর কাছে নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, টেকসই সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণে প্রতি বছরের মতো এবছরও সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় নৌযান কর্তৃক সকল প্রকার মৎস্য আহরণ বন্ধ রয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত যথাযথ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিয়মিতভাবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী বঙ্গোপসাগরে জোরদার নজরদারি পরিচালনা করছে।
জানা গেছে, নিয়মিত এই নজারদারির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ ‘বানৌজা সুরমা’ নিয়মিত টহল চলাকালীন বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজারে (ভিজিডি-৩০) ফিশিং ট্রলার দিয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরার কাজে যুক্ত ছিল শতাধিক জেলে। বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৬টি ফিশিং ট্রলার জব্দ ও ১০৩ জন জেলেকে আটক করতে সক্ষম হয় নৌবাহিনী। আটককৃত ট্রলারগুলোতে তল্লাশি চালিয়ে ১৩ হাজার ৫০০ পিস ইলিশ, অন্যান্য প্রজাতির মাছ ৮৫ কেজি এবং ৪.৫৫ লক্ষ মিটার জাল জব্দ করা হয়। এসবের আনুমানিক বাজার মূল্য ১০ কোটি ১৬ লক্ষ টাকার অধিক।
মহেশখালী উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সাহেদুল ইসলাম জানান, ইলিশসহ জব্দকৃত মাছগুলো উপজেলার বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত মাছগুলো নিলামে বিক্রির প্রক্রিয়া চলছে।
উল্লেখ্য, জাটকা নিধন প্রতিরোধ এবং ৫৮ দিনের মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকরণ অপারেশন বাস্তবায়নে নৌবাহিনী দায়িত্ব পালন করে আসছে। চলমান এ অভিযানে নৌবাহিনী এ পর্যন্ত প্রায় ১৫৭ কোটি ৯৭ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা মূল্যের অবৈধ জাল, জাটকা ও মাছ ধরার সরঞ্জামাদি জব্দ করেছে। সমুদ্রসীমা ও সমুদ্র সম্পদের সুরক্ষার পাশাপাশি দেশের মৎস্য সম্পদ এবং জীব বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধি অর্জনে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করছে বিশেষ এই বাহিনী।