মুহাম্মদ মুসা খান
গত ২৮ জুন ছিলো অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলবিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ৮৬তম জন্মদিন। ১৯৪০ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ২০০৬ সালে মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। এরপর তিনি হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। জন্মদিন উপলক্ষে রচিত লেখাটির প্রারম্ভে একটি চমৎকার তথ্য পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরতে চাই।
সময়টা ছিলো ২০১৩ সনের ৫ জুন। সেদিন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মানের এক অভিনব নজির দেখেছিলেন বিশ্ববাসি। আমেরিকার প্রভাবশালী ‘ফোর্বস ম্যাগাজিন’ বিশ্বের ‘সর্বোচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তিবর্গের’ সম্মানে এক অনুষ্ঠানের (সম্মেলন) আয়োজন করেছিলো। সে অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশের প্রফেসর ইউনূস’ ও বিশ্বের সব বিনিয়োগকারীর শিক্ষাগুরু- ‘ওয়ারেন বাফেট’কে সম্মাননা প্রদান করা হয়। জাতিসংঘ ভবনে আয়োজিত জাতিসংঘের মহাসচিব ‘বান কি-মুন’-এর উপস্থিতিতে বিশ্বের ‘দুই শতাধিক’ সর্বোচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তিবর্গের এই সম্মেলনে এই দুইজনকে ‘আজীবন সম্মাননা’ পুরস্কারে ভূষিত করা হয় (প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও ওয়ারেন বাফেট)। এই সম্মেলনে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের সম্পদের পরিমাণ তিন’শ বিলিয়ন ডলারের বেশী। অথচ তাঁদের তুলনায় ড. ইউনূসের সম্পদ বলতে তেমন কিছুই নাই। বরং তিনি হলেন, গরীবের অর্থনীতিবিদ। কিন্তু তিনি (প্রফেসর ইউনূস) ঠিকই সম্পদশালীদের নিকট হতে সম্মান আদায় করে নিতে পেরেছিলেন। যা ছিলো বিরল ঘটনা। ‘ওয়ারেন বাফেট’ ছাড়াও এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিল গেইটস , বিল এ্যাকমেন, বোনো, রে চেম্বারস, ‘রবিনহুডের’ প্রতিষ্ঠাতা ‘পল টিউডর জোন্স, পিটার জি পিটারসন, সোয়ার্স ম্যান’, এবং ‘জেফ স্কল’ প্রমুখ। সম্মেলনে ‘ফোর্বস ম্যাগাজিনের’ চীফ এডিটর ও রিপাবলিকান নেতা ‘স্টিভ ফোর্বস’ বলেছিলেন , ‘মুহাম্মদ ইউনূস দারিদ্র নিরসনে একজন অসাধারন অনুঘটক,…একজন অসাধারন ব্যক্তিত্ব”। মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে ‘স্টিভ ফোর্বস’-এর ঘোষণাকে টেনে এনে ওয়ারেন বাফেট’ তাঁর বক্তব্যে রসিকতা করে বলেন, “আগামীকাল বার্কশিয়ার হ্যাথঅ্যাওয়ের শেয়ার আকাশচুম্বী হবে, কেননা স্টিভ ফোর্বস- আমার উত্তরসূরি (সিইও) হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসের নাম ঘোষনা করেছেন। উপস্থিত সবাই এই রসিকতা উপভোগ করেন। ওয়ারেন বাফেট রসিকতা করলেও পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধনীদের সম্মেলনে তাঁকে নিয়ে এতো আলোচনা ছিলো অকল্পনীয় সম্মানের বিষয় ( আমাদের দেশের অনেকের কল্পনাতেও এমন দৃশ্য দেখতে পাবেন না) । প্রফেসর ইউনূসকে নিয়ে এই ঘটনা – প্রমাণ করে যে, তিনি সমগ্র পৃথিবীতে, সবার কাছেই ( রাষ্ট্রনায়ক ও সম্পদশালী ব্যক্তি) সমান সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। অথচ দুঃখজনক সত্য হলো, বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা- বিশ্বব্যাপী সম্মানিত এই ব্যক্তিত্বকে ‘পদ্মা নদীতে চুবানোর’ মতো ‘অসভ্য’ মন্তব্য করেছিলেন। মিথ্যা মামলার হাজিরার সময় ভবনের লিফট বন্ধ করে তাঁকে ৬ তলায় উঠতে বাধ্য করেছিলেন।
প্রফেসর ইউনূস বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারি একজন মানুষ । তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক করে ১৯৬১ সালে চট্টগ্রাম কলেজের অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার জন্য ফুলব্রাইট স্কলারশিপ লাভ করেন।
১৯৭১ সালে ‘ভান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়’’ হতে ডেভেলপমেন্ট অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে সেখানে আমেরিকার ‘মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে’ অর্থনীতির সহকারী অধ্যাপক ছিলেন।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি আমেরিকায় একটি নাগরিক কমিটি গঠন করেন এবং অন্যান্য বাংলাদেশিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সমর্থন সংগ্রহ করতে ‘বাংলাদেশ ইনফরমেশন সেন্টার’ পরিচালনা করেন।
দেশ স্বাধীনের পর তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষের পর ড. ইউনূস মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসেন, চালু করেন গ্রামীণ অর্থনৈতিক প্রকল্প। ১৯৭৬ সালে পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে ‘গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্প’ চালু করেন। ১৯৮৩ সালে এই প্রকল্পটি ‘গ্রামীণ ব্যাংক’ হিসেবে রূপান্তরিত হয়। বাংলাদেশের প্রায় সব গ্রামে এর কর্মকাÐ বিস্তৃত। বাংলাদেশের বাইরে আমেরিকাসহ বিশ্বের ৪৫টি দেশে গ্রামীণ ব্যাংকের আদলে ১৩২টি প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালাচ্ছে।
যখন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের ৮৬তম জন্মদিন পালিত হচ্ছে, তখন একই সাথে উদযাপন হচ্ছে- ১৫তম সামাজিক ব্যবসা দিবস। (যা বিগত ১৫ বছর যাবত পালন করা হচ্ছে) গ্রামীণ গ্রæপের সহযোগিতায় ইউনূস সেন্টার কর্তৃক আয়োজিত ২৭-২৮ জুন, ২০২৫ তারিখে সাভারের জিরাবোতে অবস্থিত সামাজিক কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘সামাজিক ব্যবসা সাম্মিট’। সম্মেলনটিতে “সকলের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য সামাজিক ব্যবসা সবচেয়ে কার্যকর পথ” এই প্রতিপাদ্যের উপর আলোকপাত করা হচ্ছে। সেখানে সমগ্র পৃথিবী হতে চার শতাধিক মানুষ অংশ নিচ্ছেন।
উল্লেখ্য যে, বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা বৈষম্য, অদক্ষতা এবং সীমিত অ্যাক্সেসের মুখোমুখি, যার ফলে প্রান্তিক সম্প্রদায়গুলি সুবিধাবঞ্চিত থাকে। এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পুনর্কল্পনা, ন্যায়সঙ্গত অ্যাক্সেস প্রচার, প্রতিরোধমূলক যত্নকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং সমাজের সকল স্তরে নৈতিক ও দায়িত্বশীল অনুশীলন নিশ্চিত করার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সামাজিক ব্যবসার প্যানেলগুলি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সাশ্রয়ী মূল্যের এবং টেকসই সমাধান তৈরির জন্য সামাজিক ব্যবসায়িক মডেল, প্রযুক্তি একীকরণ, নীতি কাঠামো এবং অংশীদারিত্ব অন্বেষণ করবে- বলে জানা গেছে । অনুষ্ঠানে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস মূল ব্যক্তিত্ব হিসাবে উপস্থিত আছেন। এর সাথে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান থাকবে। একাডেমিয়া সংলাপ যা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় আয়োজিত হবে। এখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং গবেষকরা শিক্ষাক্ষেত্রে সামাজিক ব্যবসা শিক্ষার ভূমিকা এবং অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করবেন। এরপর, ৩তঊজঙ ক্লাব কনভেনশন একই স্থানে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আলোচনা হবে-কীভাবে ‘তিন শূন্যের’ একটি বিশ্ব তৈরি করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হবে – শূন্য নেট কার্বন নির্গমন, দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ এবং সর্বোপরি শূন্য বেকারত্ব- নিশ্চিত করার বিষয়ে আলাপ হবে।
আমরা সবাই জানি যে, প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর ‘অনন্যসাধারণ উদ্ভাবনী শক্তি’, সমগ্র বিশ্বের ‘দারিদ্র্য বিমোচন’ ও ‘মানবতার উপকারের’ জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ ও সৃজনশীলতার’ জন্য ইতোমধ্যে দেশে এবং বিদেশে ‘দেড় শতাধিক’ সম্মানজনক পুরস্কার পেয়েছেন এবং সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, (আন্তর্জাতিক)- ১৯৮৪ সালে ফিলিপাইনের র্যামন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ড, বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার(১৯৯৪), সিডনি শান্তি পুরস্কার (১৯৯৮), প্রিন্স অব অস্ট্রিয়াস অ্যাওয়ার্ড (১৯৯৮), নোবেল শান্তি পুরস্কার (২০০৬), সিউল শান্তি পুরস্কার (২০০৬), যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম (২০০৯) ও কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল (২০১০), ‘জাতিসংঘ ফাউন্ডেশনের’ ‘চ্যাম্পিয়ন অব গ্লোবাল চেঞ্জ’ পুরস্কার’ ইত্যাদি। ‘জাতিসংঘ ফাউন্ডেশনের’ ‘চ্যাম্পিয়ন অব গ্লোবাল চেঞ্জ’ পুরস্কার’ প্রদানকালে ‘জাতিসংঘ ফাউন্ডেশন’ জানিয়েছিলো, ‘মানুষের মর্যাদা, সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তাঁর অসামান্য নেতৃত্ব ও উদ্ভাবনের স্বীকৃতি স্বরূপ নোবেল লরিয়েট ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে এই পুরস্কার দেয়া হলো।’ উল্লেখ্য যে, এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও বিল ক্লিনটন, জাতিসংঘ মহাসচিব কফি আনান ও বান কি মুন, আর্চবিশপ ডেসমন্ড টু টু এবং শুভেচ্ছাদূত অ্যাঞ্জেলিনা জোলি এই পুরস্কার পেয়েছেন।
এছাড়া গত ২৩ জুলাই’২১ ক্রীড়া জগতের ‘সর্বোচ্চ পুরস্কার’ ‘অলিম্পিক লরেল’ পেয়েছিলেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এই পুরস্কার সম্পর্কে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা শিনহুয়া মন্তব্য করেছিল , যেসব ব্যক্তি ক্রীড়ার মাধ্যমে শিক্ষা, সংস্কৃতি, উন্নয়ন ও শান্তিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন, তাঁদেরই এই সম্মাননা দেয়া হয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূস হচ্ছেন এই পুরস্কারপ্রাপ্ত দ্বিতীয় ব্যক্তি। এর আগে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো অলিম্পিক লরেল জিতেছিলেন কেনিয়ার সাবেক অলিম্পিয়ান ‘কিপ কেইনো’। বিশ্বের ইতিহাসে ‘সেরা সাত পুরস্কার’ প্রাপ্তদের মধ্যে ‘প্রফেসর ইউনূস’ একজন। পৃথিবীর ২০জন সম্মানিত ব্যক্তির তালিকায় তিনি নবম স্থানে ছিলেন। ‘ফোর্বস ম্যাগাজিনের’ ‘টেন মোস্ট ইনফ্লুয়েনশিয়াল বিজনেস গুরুস’ তালিকায় মুহাম্মদ ইউনূসও ছিলেন।
বাংলাদেশেও সরকারি ও বেসরকারি প্রচুর পুরস্কার পেয়েছেন তিনি । পুরস্কার গুলো হলো-বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পুরস্কার (১৯৭৮), সেন্ট্রাল ব্যাংক অ্যাওয়ার্ড (১৯৮৫), স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৮৭), রিয়ার অ্যাডমিরাল এম এ খান মেমোরিয়াল গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড(১৯৯৪) ও ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম মেমোরিয়াল গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড (১৯৯৪), আরসিএমডি অ্যাওয়ার্ড (১৯৯৫), আইডিইবি গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড(২০০০), কম্পিউটার সোসাইটি গোল্ড মেডেল(২০০৫)। তিনি যদি এতই অযোগ্য মানুষ হতেন, তাহলে এতগুলো পুরস্কারে ভূষিত হতেন না! প্রফেসর ইউনূসের এসব পুরস্কার অর্জনে তাঁর পাশপাশি বাংলাদেশও সম্মানিত হয়েছে বলে আমরা মনে করি। দারিদ্র্য বিমোচন ও নিরাপদ পৃথিবীর জন্য ‘যাবতীয় বৈষয়িক লাভের’ চিন্তা বাদ দিয়ে তিনি যেভাবে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন, তাতে দেশের সম্মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আমরা লক্ষ্য করেছি যে, প্রফেসর ইউনূসের বিরুদ্ধে কখনোই কোন নেতিবাচক কাজের অভিযোগ পাওয়া যায়নি (যেমন-দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, রাষ্ট্রীয় তহবিল আত্মসাৎ, ভূমিদস্যুতা, কালো টাকা সাদা করা, অর্থ পাচার, অবৈধ সম্পদ অর্জন ইত্যাদির কোন অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে কখনোই ছিল না। তাঁর শত্রæরাও এই অভিযোগ তুলতে পারবে না )। হাঁ, মামলা- মোকাদ্দমা যা হয়েছে, অনেক মামলা মিথ্যা। যা ব্যাখ্যার দাবি রাখে। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর সমালোচকদের সাথে ব্যক্তিগত ঝগড়ার পরিবর্তে ‘মানবাতাবাদি- সৃজনশীল’ কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। তিনি হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন। যা বলা বাহুল্য মাত্র।
বর্তমানে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী সরকার প্রধান শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যাওয়ার পর ৮ আগস্ট তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অর্থনীতিকভাবে বিধ্বস্ত একটি দেশের দায়িত্ব নিয়ে সবাইকে সাথে নিয়ে তিনি দেশের পুনরুদ্ধারের কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর দায়িত্ব পালন খুব একটা সহজ সাধ্য নয়। তাঁকে বিভিন্ন গ্রæপের দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অপপ্রচারও চালানো হচ্ছে। আমাদের প্রত্যাশা, তিনি সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে দিতে পারবেন এবং একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারবেন। জন্মদিনে বাংলাদেশের এই ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে ৮৬তম প্রাণঢালা শ্রদ্ধা অভিনন্দন। আমরা তাঁর স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
লেখক : কলামিস্ট, রাজনীতি বিশ্লেষক ও সমাজকর্মী