নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকে জামায়াত নেতার প্রত্যয়নপত্র

2

রাঙামাটি প্রতিনিধি

ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকে প্রত্যয়নপত্র দিলেন জামায়াত নেতা। রাজধানীতে গ্রেপ্তার ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকে প্রত্যয়নপত্র দিলেন রাঙামাটি জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আব্দুল আলীম। গত ৩ ডিসেম্বর জামায়াত আমীরের সিল ও স্বাক্ষরসহ এ প্রত্যয়নপত্রটি দেওয়া হয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তোলপাড় শুরু হয়।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে পুলিশ ও সরকারদলীয় সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত ছাত্রদের চিকিৎসা না দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন তিনি।
গত ৩ ডিসেম্বর রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রত্যয়নপত্রের (চারিত্রিক সনদ) ছবিটি ছড়িয়ে পড়ে। ছবিতে দেখা যায়, ৩ ডিসেম্বর রাঙামাটি জেলা আমীর স্বাক্ষরিত প্রত্যায়নপত্রে রাঙামাটি পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৌরভ বড়–য়ার ছেলে ডা. শ্রীকুশ বড়–য়াকে প্রত্যয়নপত্র প্রদান করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১ ডিসেম্বর রাতে আটক করে তাকে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় সোপর্দ করে ছাত্র-জনতা। তিনি ইসলামী ব্যাংক কার্ডিয়াক হসপিটাল মিরপুরে ইমারজেন্সি বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তিনি রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহব্বায়ক।
অনেকের অভিযোগ, গত সরকারের আমলে অর্নব ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় থেকে উশৃংখল কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন। তিনি ভিন্নমতের একাধিক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
তিনি সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন ও সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমার আস্থাভাজন হিসাবেও পরিচিত ছিলেন। ইতিমধ্যে তাদের সাথে একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই এ নিয়ে সমালোচনা করছেন।
রাঙামাটির জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মো. জসিম উদ্দিন জেলা আমীরের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে লেখেন, ‘রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সোনার ছেলেদের চারিত্রিক সার্টিফিকেট দিচ্ছেন রাঙামাটির আমীরে জামায়াত। ভোট দরকার নাকি বান্ডিল দরকার বুঝে আসে না…. মর্মাহত হলাম।’
সেই পোস্টে আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘ছাত্রলীগের প্রশ্রয়ের মূল আশ্রয়স্থল হিসেবে কি জামায়াত নিজেদের অবস্থান প্রকাশ করছে? এ প্রত্যয়নপত্র এক প্রকার পাগলের প্রলাপের মত। কুশ বড়ুয়া রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, তিনি ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন সময় ভয় প্রদর্শনসহ বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন, আর জামায়াত তার সু-চরিত্রের সার্টিফিকেট দিচ্ছে, এটি জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধংসের ষড়যন্ত্রের সামিল বলে মনে করছি।’
এ বিষয়ে রাঙামাটি জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আব্দুল আলীমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ডা. কুশ বড়–য়া অর্নব আমাকে যেভাবে তথ্য গোপন করে সহজ-সরলভাবে বলেছেন, তাতে আমি বিশ^াস করে তার উপকারের জন্য প্রত্যয়নপত্র দিয়েছি।