নির্বাচনের সময় নিয়ে একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, কিছু বিষয় থাকলেও সেখানে ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ ছিল না। গতকাল শনিবার দুপুরে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে এক পোস্টে আইন উপদেষ্টা বলেছেন, ‘সম্প্রতি একটি টিভি আলোচনায় আমি বলেছি, নির্বাচন হয়তো আগমী বছরের মধ্যে সম্ভব হতে পারে, তবে এক্ষেত্রে অনেকগুলো ফ্যাক্টর রয়েছে। সেখানে এসব ফ্যাক্টর পুরোপুরি ব্যাখা করার সুযোগ পাইনি’।
নির্বাচনের সময় ঘোষণার এখতিয়ার শুধু প্রধান উপদেষ্টার বলেও উল্লেখ করেছেন তার পোস্টে।
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে চ্যানেল আইয়ের সংবাদ পর্যালোচনামূলক অনুষ্ঠান ‘আজকের সংবাদ’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, রিয়েলিস্টিক্যালি আগামি বছরের মধ্যে (২০২৫) ইলেকশন করাটা হয়ত সম্ভব হতে পারে’।
সরকার ‘কিছুদিনের মধ্যেই’ সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেবে বলেও ওই অনুষ্ঠানে জানান তিনি। এরপর ভোটার তালিকা হালনাগাদ হবে, বলেন তিনি।
পরদিন সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে অন্তর্র্বর্তী সরকার নির্বাচন কবে দেবে- বড় হয়ে ওঠা এই প্রশ্নের মধ্যে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্যকে ‘ব্যক্তিগত’ বলেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, এই দুই জনের বক্তব্য সরকারের বক্তব্য নয়।
নির্বাচন নিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘একটি সরকারের পতন হয়েছে। সেই সরকারের অবশিষ্ট সময় পূরণের জন্যই অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার বসানো হয়েছে। তার চেয়ে বড় কথা রাষ্ট্র সংস্কার প্রসঙ্গ। সংস্কার না করে নির্বাচন দিলে রাষ্ট্র নড়বড়ই থেকে যাবে। তাই সরকার সংস্কারে গভীরভাবে কাজ করছে’।
নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে আসিফ নজরুল ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘কিন্তু আমাদের সরকারের কথা থেকে সবাই বুঝবেন যে নির্বাচনের জন্য সংস্কার ও রাজনৈতিক সমঝোতার কথা বলা হয়, এগুলোই সেই ফ্যাক্টর। সংস্কারের কথা আমিও অনুষ্ঠানে বলেছি। আরও কিছু ফ্যাক্টর আমি অনুষ্ঠানটিতে ব্যাখা করেছি, যেমন: সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠন, ভোটার তালিকা প্রনয়ণ ইত্যাদি। এসব ফ্যাক্টর ঠিক থাকলে নির্বাচন হয়তো হতে পারে আগামি বছর। বলেছি এটাও আমার প্রাথমিক অনুমান’।
গণমাধ্যমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এই শর্তভিত্তিক ধারনা ও অনুমানকে কিছু গণমাধ্যম নির্বাচনের ঘোষণা হিসেবে দেখাচ্ছেন। বিনয়ের সাথে বলছি, এটা সঠিক নয়’।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পলিসি ডিসিশন। এর সময় সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ঠিক হবে। তিনিই একমাত্র এটা ঘোষণার এখতিয়ার রাখেন’।