নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত সেনাবাহিনী

1

পূর্বদেশ ডেস্ক

আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে, সে বিষয়ে সরকারের তরফে সেনাবাহিনীকে কিছু জানানো হয়নি জানিয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) বলছে, নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত আছে সেনাবাহিনী। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সামরিক অপারেশনস পরিদপ্তরের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।
এক সাংবাদিক জানতে চান, আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন হতে পারে। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী কী ভূমিকা রাখবে?
জবাবে কর্নেল শফিকুল বলেন, আমরা এখনও সরকারের পক্ষ থেকে অফিসিয়ালি কোনো নির্দেশনা প্রাপ্ত হইনি। তবে সরকার নির্দেশনা দিলে নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করব। খবর বিডিনিউজের।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার লন্ডনে মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক পরবর্তী যৌথ ঘোষণায় আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভোটের আভাস দেওয়া হয়। ঘোষণায় বলা হয়, বৈঠকে তারেক রহমান আগামী রোজার আগে ভোটের প্রস্তাব করেন। তখন মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে বলা হয়, রোজা শুরুর ‘আগের সপ্তাহেও’ ভোট করা যেতে পারে।
‘মব জাস্টিস’ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সেনা কর্মকর্তা শফিকুল বলেন, এ ব্যাপারে সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এর আগে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, আগামীতেও করবে।
কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে এবার সেনাবাহিনী বেশ সক্রিয় ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া ভাড়ার নামে অতিরিক্ত টাকা ফেরতের পাশাপাশি যানজট নিরসনেও কাজ করেছে সেনা বাহিনীর সদস্যরা। এবার আমাদের পুরুষের পাশাপাশি মহিলা অফিসার এবং সৈনিকরা রাস্তায় নেমে দিনে রাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করেছে।
ঈদযাত্রায় বিভিন্ন বাস অপারেটরের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়ার ৩৫ লাখ টাকা যাত্রীদের হাতে ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় জানিয়ে শফিকুল বলেন, সেনাবাহিনীর তৎপরতার কারণে গত ঈদের চেয়ে এবার ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা এবং দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৪০ ভাগ কমেছে।
গত ১০ জুন জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ফুটবল ম্যাচ চলাকালে সেনা সদস্যের হাতে এক পতাকা বিক্রেতার মারধরের শিকার হওয়ার বিষয়টিও ওঠে সংবাদ সম্মেলনে।
জবাবে শফিকুল ইসলাম বলেন, এটা আন্তর্জাতিক মানের ফুটবল ম্যাচ ছিল। সেখানে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য যতটুকু করা দরকার করা হয়েছে। এটি একটি দুঃখজনক এবং বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল। পরবর্তীতে ওই পতাকা বিক্রেতাকে ডেকে সমবেদনা জানিয়েছি এবং ব্যবসা প্রসারের জন্য এক লাখ টাকা প্রদান করা হয়।
মাসখানেক ধরে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতের পুশ ইনের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে বর্ডার গার্ড এবং কোস্ট গার্ড সতর্ক আছে। গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে সেনাবাহিনী অন্তর্ভুক্ত হওয়ার মত পরিস্থিতি হয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাহাড়ের অনেক এলাকায় পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা শিগগিরই প্রত্যাহার করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, এক্সেল বাবুকে গ্রেপ্তার এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ অস্ত্র, মাদক উদ্ধারের তথ্য তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের পর সামরিক অপারেশনস পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজিম-উদ-দৌলা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন।