নিরাপদ খাবার ও ব্যবহারযোগ্য পানিকে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করে হাই কোর্ট রায় দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের বেঞ্চ এই রায় দেয়।
হাই কোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের বেঞ্চ ২০২০ সালে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেছিল। পরে আদালতকে সহায়তা করতে কয়েকজন আইনজীবীকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
মনজিল মোরসেদ, মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং মানবাধিকার সংগঠন বেলার তরফে মিনহাজুল ইসলাম আইনজীবী হিসেবে এ সহায়তা দেন। খবর বিডিনিউজের।
আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিরাপদ খাবার ও ব্যবহারযোগ্য পানি নিশ্চিত করতে ২০২০ সালে সুয়েমটো রুল জারি করেছিল হাই কোর্ট। সেখানে বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জন্য নিরাপদ পানযোগ্য পানি সরবরাহ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব কি না, অথবা এই নিরাপদ পানি পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে কেন ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। উক্ত রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে আজ আদালত রায় ঘোষণা করেছেন।
রায়ে আদালত স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, বাংলাদেশ সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপদ এবং বিশুদ্ধ পানযোগ্য পানি পাওয়া একটি মৌলিক অধিকার এবং এই পানির অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
নিরাপদ পানযোগ্য পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য আদালত কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে বলেও জানান আইনজীবী পল্লব। এগুলোর মধ্যে রয়েছে: ১. আগামী এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অর্থাৎ আদালত, ধর্মীয় উপাসনালয়, হাসপাতাল, রেল স্টেশন, হাট- বাজার, এয়ারপোর্টসহ প্রত্যেক পাবলিক প্লেসে নিরাপদ পানযোগ্য পানি প্রত্যক নাগরিকের জন্য নিশ্চিত করতে হবে। ২. আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিরাপদ এবং পানযোগ্য পানি সাশ্রয়ী মূল্যে নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৩. ২০২৬ সালের মধ্যে সব পাবলিক প্লেসে বিনামূল্যে নিরাপদ পানি সরবরাহে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তার প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে হবে সরকারকে।