মিতা পোদ্দার
নিত্যপণ্যের দামের বর্তমান লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সব স্তরের মানুষ ভোগান্তিতে পড়লেও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য তা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। গরিব আছে সংকটে আর মধ্যবিত্তরা দিশেহারা। বাজার করা দিন দিন প্রতিটি পরিবারের জন্য এখন রীতিমতো দুস্কর হয়ে উঠেছে।
বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন অজুহাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিপাকে ফেলছেন। একবার যে পণ্যের দাম বাড়ে, তা আর কমে না।
নিত্যপণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির ফলে নানা পেশাজীবীর মানুষ, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ জনগোষ্ঠীর জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছেন। নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় সব দ্রব্যের মূল্য ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই তুলনায় মানুষের আয় দ্রব্যমূল্যের সমানুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে না। লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির ফলে দেশের বেশির ভাগ মানুষ তাঁদের চাহিদা মেটাতে অক্ষম হয়ে পড়ছেন। এমন করে কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করবে? ৫০০ টাকা ১০০০ টাকায় এখন বাজার মিলেনা। এ হেন অবস্থা চলতে থাকলে বাংলার মানুষকে না খেয়ে মরতে হবে।নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বর্তমানে সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে। মানুষ তাঁর আয়ের সাথে ব্যয়ের হিসাব মিলাতে হিমসিম খাচ্ছে। মধ্যবৃত্ত বা নি¤œবৃত্ত পরিবারের মুখ গুলো এখন আর ভালো খাওয়ার চিন্তা মাথায় নিতে পারেনা। যখন মাছ মাংসের দাম ছিল ধরা ছোঁয়ার বাইরে তখন এই সাধারণ মানুষগুলোর সবজিই ছিল বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল। সেখানে সবার চোখে মুখে এখন হতাশা বিনে কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। এ কেমন সরকার ব্যবস্থা? অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে আমার আবেদন এসবের কোন সমাধান নেই? যদি নাই থাকে তাহলে কিসের প্রশাসন? আমরা কার কাছে আমাদের এই বার্তা প্রকাশ করবো। অতীতে ও সিন্ডিকেটের কালো হাত নিয়ে বিভিন্নভাবে মত বিনিময় করা হয়েছে। তাহলে কেন এখনও আমাদের একই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ? বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন অজুহাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিপাকে ফেলছেন। একবার যে পণ্যের দাম বাড়ে, তা আর কমে না। সরকারি বিভিন্ন সংস্থা এ ব্যাপারে কাজ করলেও, তা তেমন কার্যকর ভূমিকা না রাখায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আসছে না। প্রতি কেজি আলু ৫৫-৬০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১১০-১২০ টাকা, বেগুন ১২০টাকা, আদা (দেশি) ৩২০-৩৪০ , ব্রয়লার মুরগি ২০৫ -২১০,ডিম (ডজন প্রতি )১৬৮ টাকা , তাছাড়া বিভিন্ন সবজি ১০০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে।নিত্যপণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির ফলে নানা পেশাজীবীর মানুষ, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ জনগোষ্ঠীর জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছেন। অথচ বেতন বৃদ্ধিতে কারও নজর নেই। যেখানে এত টাকার বাজার নিতে হয়, সেখানে পরিবার কিভাবে শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিত করবে? আর শিক্ষা নিশ্চিত না হলে দেশের অর্থনীতি দূর্বল হয়ে পড়বে। আমাদের প্রত্যাশা কখনোই পূরণ হওয়ার নয়। আমরা সমৃদ্ধ জাতি গঠনে পিছিয়ে যাবো। সুতরাং অনতিবিলম্বে দ্রব্যমূল্যের এই কষাঘাত থেকে মানুষকে মুক্তি দিন। ভোগ্যপণ্য কখনোই আয়ত্তসীমার বাইরে নেওয়া উচিত নয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে প্রতিটি মানুষ হাঁফ ছেড়ে বাঁচতে পারবে।
লেখক : প্রাবন্ধিক