নিজের স্ত্রীকে ভাবী সাজিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা আত্মসাৎ!

1

পটিয়া প্রতিনিধি

পটিয়ায় নিজের স্ত্রীকে মৃত মুক্তিযোদ্ধা ভাইয়ের স্ত্রী সাজিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। কচুয়াই ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মাহাবুব আলম ও তার স্ত্রী রাশু আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে স্থানীয়রা জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কচুয়াই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের চিরকুমার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ছিলেন চিরকুমার। জীবিতকালে নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেতেন। তিনি ২০২১ সালে মারা যান। এরপর তার ছোট ভাই মাহাবুব আলম নিজের স্ত্রীকে মুক্তিযোদ্ধা ভাইয়ের স্ত্রী (ভাবী) সাজিয়ে জাল কাবিননামা ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। এতে রাশু আক্তারকে মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালামের স্ত্রী হিসেবে দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালামের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তিনি অবিবাহিত ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আজিম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম চিরকুমার অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর থেকেই তার ভাই মাহবুব আলম নিজ স্ত্রীকে মৃত ভাইয়ের স্ত্রী সাজিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা আত্মসাৎ করছেন।
এই ব্যাপারে গত ৫ মে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কচুয়াই ইউনিয়নের বাসিন্দারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এতে তারা উল্লেখ করেন, মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবুল কালাম মেম্বার ছিলেন চিরকুমার। তার মৃত্যুর পর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা আত্মসাৎ করে আসছেন তার ছোট ভাই মাহবুব আলম। তিনি নিজ স্ত্রীকে মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালামের স্ত্রী বানিয়ে এবং মাহবুব আলমের এক পুত্র জিহাদুল আলমকে আবুল কালামের পুত্র বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা আত্মসাৎ করছেন। এই দুর্নীতির কাজে সহযোগিতায় জড়িত কচুয়াই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এসএম ইনজামুল হক।
এ বিষয়ে সরেজমিন তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে আত্মসাতের টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত এবং আত্মসাতের অভিযোগে মাহবুব আলম ও রাশু আকতারের শাস্তির দাবি করেন স্থানীয়রা।
এই ঘটনার ব্যাপারে জানতে মাহবুব আলমের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তা বন্ধ থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
পটিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারহানুর রহমান বলেন, চিরকুমার মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী দাবি করে ভাতা আত্মসাৎ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। মুক্তিযোদ্ধার ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আরও ২-৩টি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। সবকটি অভিযোগ সমাজসেবা অফিসারকে দেয়া হয়েছে তদন্তের জন্য। তারা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।