না ফেরার দেশে অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান

1

না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
গতকাল শনিবার জোহরের নামাজের পর রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে এই অভিনেত্রীর। এর আগে তাকে নেওয়া হয় এফডিসিতে। সেখানে তার ১ম জানাজা হয়। এরপর নেওয়া হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে।
অঞ্জনার মৃত্যুতে মিডিয়া অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীসহ মিডিয়া অঙ্গনের অনেকেই।
অঞ্জনার মৃত্যুতে শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়ে সুপারস্টার শাকিব খান লিখেছেন, ‘অঞ্জনা ম্যাডামের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।’ অভিনেত্রী জয়া আহসান লিখেছেন, ‘শান্তিতে থাকুন কিংবদন্তি অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান ম্যাডাম।’
অভিনেতা মিশা সওদাগর লিখেছেন, ‘কিংবদন্তি বাংলাদেশি চিত্রনায়িকা অঞ্জনা আপা আর নেই। আমার শোক জানানোর কোনও ভাষা নেই। দোয়া করবেন।’ পূজা চেরী লিখেছেন, ‘ভেতরটা ধুঁক করে উঠল। ভালো থাকবেন আপনি যেখানেই থাকুন।’
আশনা হাবীব ভাবনা লিখেছেন, ‘আপনার আত্মা শান্তি পাক। আপনার স্মৃতি আমাদের হৃদয়ে সারাজীবন জ্বলজ্বল করবে। বিদায় সুপারস্টার।’
জায়েদ খান লিখেছেন, ‘কত স্মৃতি আপনার সাথে, কীভাবে ভুলবো? না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র শিল্পী অঞ্জনা সুলতানা। তার জন্য দোয়া কামনা করছি।’
নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক লিখেছেন, ‘না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র শিল্পী অঞ্জনা রহমান। শোক ও শ্রদ্ধা আপনার জন্য।’
নির্মাতা দেবাশীষ বিশ্বাস লিখেছেন, ‘ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইসে, লাল লাল নীল নীল বাত্তি দেইখা নয়ন জুড়াইসে… আশা ফুরানোর আগেই আপনার জীবন ফুরিয়ে গেলো! নয়ন জুড়ানোর আগেই আপনার নয়ন চিরতরে বন্ধ হয়ে গেলো! আপনি চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। আমার বাবার পরিচালিত ‘জিঞ্জির’, ‘আনারকলি’ ও ‘অংশীদার’-এই তিন তিনটি সুপারহিট চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী হয়ে আপনি ছিলেন আমার বাবা-মায়ের অতি আপন তথা আমাদের পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এরপর আমার কর্মজীবনে কতশত অনুষ্ঠানে আপনার সাথে দেখা হওয়া, একসাথে কাজ করার সৌভাগ্য হওয়া, সবই স্মৃতি হয়ে গেলো! কোনও মৃত্যুই কাম্য নয়! কিন্তু প্রবীণ হয়েও এত উচ্ছল, চঞ্চল, আনন্দদায়ক নবীন প্রাণের অকালপ্রয়াণ মেনে নেয়া ভীষণ কষ্টকর! এরকমই প্রাণোচ্ছল কাটুক পরপার জীবন।’
বলা প্রয়োজন, বিগত কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ছিলেন অঞ্জনা রহমান। অবশেষে শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।উল্লেখ্য, ‘দস্যু বনহুর’ দিয়ে চিত্রজগতে পথচলা শুরু করেন অঞ্জনা। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন সোহেল রানা। ১৯৭৬ সালের এই সিনেমার পর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর একে একে অভিনয় করেছেন তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে। ‘পরিণীতা’ ও ‘গাঙচিল’-এ অভিনয়ের জন্য দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন।