নারায়ণ নাথ ও বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যানসহ আসামি ৪ জন

4

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক নারায়ণ নাথের ছেলে নক্ষত্র দেব নাথের এইচএসসির পরীক্ষার ফলাফল জালিয়াতির ঘটনায় ৪ জনকে আসামি করে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেছে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড।
গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষাবোর্ডের সচিব ড. একেএম সামছু উদ্দিন আজাদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথ, শিক্ষাবোর্ডের সাবেক সিস্টেম এনালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খান, নক্ষত্র দেব নাথ ও সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুস্তফা কামরুল আখতার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের চারমাস পর ব্যাপক আলোচিত এ ঘটনায় মামলাটি করা হয়েছে। এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) বিভাগের শৃঙ্খলা অণুবিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব শতরূপা তালুকদার নারায়ণের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করাসহ একাধিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব ড. একেএম সামছু উদ্দিন আজাদ পূর্বদেশকে বলেন, ছেলের ফল জালিয়াতির ঘটনায় সাবেক সচিব ও চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলাটি দায়ের করেছি। পদাধিকার বলে আমি বাদী হয়েছি। চারজনের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪২০, ৪৬৫, ৪৬৬, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ৩৪ ধারা এবং পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইন, ১৯৮০ এর ৫, ৬, ১২ ও ১৩ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছিল ২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ফলাফল প্রকাশের আগে যে কোন সময় আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতি করে নক্ষত্র দেবনাথের ফলাফল পরিবর্তন করেন। নক্ষত্র ছাড়া বাকি ৩ জন জালিয়াতির সময় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে স্ব স্ব পদে দায়িত্বরত ছিলেন।
নারায়ণ চন্দ্র নাথ ২০২২ সালে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেই বছর তার ছেলে নক্ষত্র দেবনাথ চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। ফলাফল ঘোষণার পর অভিযোগ ওঠে, নারায়ণ চন্দ্র নাথ তার ছেলেকে জালিয়াতির মাধ্যমে জিপিএ ফাইভ পাইয়ে দিয়েছেন। কে বা কারা নক্ষত্রের ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করলে তার মা বনশ্রী দেবনাথ নগরীর পাঁচলাইশ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর ফলে বিতর্ক আরও জোরালো হয়। এ অবস্থায় গত বছর জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
মাউশি’র শৃঙ্খলা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব শতরূপা তালুকদার স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, তদন্তে নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এজন্য তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী মামলাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া ও নক্ষত্রের ফলাফল বাতিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর ভিত্তিতে জালিয়াতির দায়ে মাউশি’র চট্টগ্রামের পরিচালক পদ থেকে নারায়ণকে ওএসডি করা হয়। এছাড়া তার ছেলের ফলাফল বাতিল করা হয়।