নিজস্ব প্রতিবেদক
মন্ত্রণালয়েল নির্দেশের ২৭ দিন পেরিয়ে গেলেও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেনি বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিম। এর আগে ফল জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর নারায়ণ নাথসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে মন্ত্রণালয়ের চিঠি হাতে পেয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণ নাথকে তার কর্মস্থল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালকের পদ থেকে সরিয়ে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হয়।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা বিষয়ক শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব শতরূপা তালুকদার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে বিধিমতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়।
নির্দেশনায় বলা হয়, ‘মাউশি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক নারায়ন চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে ফলাফল জালিয়াতি তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। এ জালিয়াতিতে তার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো। তবে চিঠির ২৭ দিন পেরিয়ে গেলেও নারায়ণ চন্দ্র নাথসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারেনি বোর্ড চেয়ারম্যান।এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডর চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিম পূর্বদেশকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা প্রতিপালনে আমরা সর্বদা সচেষ্ট আছি। সাবেক সচিবের ছেলের ফলাফল জালিয়াতির বিষয়ে মন্ত্রণালয় আমাকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে। তবে কিছু টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে মামলা দায়ের করতে সময়ক্ষেপন হচ্ছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আইন উপদেষ্টার সাথে আলোচনা করে এ মামলা দায়ের করবো।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও বোর্ড সচিব অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলে। প্রভাব খাটিয়ে ছেলেকে পাশ করিয়েছেন, এমন সন্দেহে উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন জানিয়েছেন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। সে সময় রহস্য উন্মোচনে তদন্ত এবং প্রভবামুক্ত উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষাবিদরা। কিন্তু সেটি এক সময় ধামাচাপা পড়ে যায়। পুনঃনিরীক্ষণ থামাতে গত বছরের ৫ নভেম্বর নগরের পাঁচলাইশ থানায় জিডি করেন বোর্ড সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথের স্ত্রী বনশ্রী নাথ।
পরবর্তীতে গত ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক আব্দুল আলীম ও অধ্যাপক ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে প্রতারণা, কম্পিউটারে বেআইনি প্রবেশসহ গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছেন নারায়ণ চন্দ্র নাথের স্ত্রী বনশ্রী নাথ। ট্রইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক এ সচিবের বিরুদ্ধে ছেলেকে জিপিএ-৫ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের তদন্তভার যায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের কাছে। গত ৪ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। বর্তমানে নারায়ন চন্দ্র নাথ সংস্থাটির চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক হিসেবে কর্মরত। তদন্তে ফল জালিয়াতির প্রমাণ পায় কমিটি।