পূর্বদেশ ডেস্ক
টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রাতভর মর্টার শেল, বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে সীমান্তে বসবাসকারীরা। এর মধ্যে গতকাল রোববার বিকালে নাফ নদীতে দুই দেশের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুটি চরকে ঘিরে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে এসেছে। এতে নিকটবর্তী টেকনাফ স্থলবন্দরে থাকা শ্রমিক-ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের কেরুণতলী ও হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যেও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, সংঘাতের জেরে মিয়ানমারের লালদিয়া চরে সংঘাতের খবর পাওয়া গেছে। কারা বা কাদের সঙ্গে সংঘাত বলা যাচ্ছে না। সীমান্তে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সর্তক রয়েছে।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের কেরুণতলী ও হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকার মাঝামাঝি অবস্থিত টেকনাফ স্থলবন্দর। নাফ নদীর তীরে অবস্থিত বন্দরের অনুমানিক ২৫-৩০ ফুট পূর্বে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত জালিয়াদিয়া নামের চর। আর জালিয়াদিয়া থেকে পূর্ব-উত্তরের অনুমানিক ৫০ ফুট দূরে মিয়ানমার নিয়ন্ত্রিত লালদিয়া নামের চরটি।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের কেরুণতলী এলাকার ইউপি সদস্য নজির আহমদ এবং হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকার ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী জানিয়েছেন, বিকালে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ওই এলাকায় বিকট বিস্ফোরণের শব্দ হয়েছে।
হঠাৎ করে বিকট শব্দ ভেসে এলে বন্দরে থাকা শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। এতে আতঙ্কে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্কে ঘর-বাড়ি থেকে রাস্তায় বের হয়ে আসেন মানুষজন।
দুই জনপ্রতিনিধির ধারণা, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে এখন সংঘাত তীব্র হয়ে উঠেছে। বিগত কিছুদিন ধরে এই এলাকার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে আরাকার আর্মির মধ্যে। ফলে এই চর দুইটি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত চলছে বলে নানাভাবে শোনা যাচ্ছে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না বলেও জানান দুই ইউপি সদস্য। তারা জানান, বিকাল সাড়ে ৫টার পর থেকে শব্দ শোনা যাচ্ছে না।
১৮ সেপ্টেমর লালদিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সংঘাতে গুলি এসে পড়ে টেকনাফ স্থলবন্দরের কার্যালয়, একটি পণ্যবাহী ট্রাক ও স্থানীয় এক ব্যক্তির বসতঘরে। এ ব্যাপারে কথা বলতে বিজিবির টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।