নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে কারাগারে আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আদালতের নির্দেশ মেনে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় কারাগারের সম্মেলন কক্ষে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদের নেতৃত্বে একটি দল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রায় ঘন্টাখানেক জিজ্ঞাসাবাদের পর কারাগার ছেড়ে যান দুদক কর্মকর্তারা।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন,নেজামুদ্দিন নদভী আইআইইউসি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি এবং আরও কয়েকজন মিলে ওই ট্রাস্ট থেকে সম্মানীর নামে প্রায় দশ কোটি টাকা আত্মসাতের একটি অভিযোগ আমরা অনুসন্ধান করছি। আদালতের অনুমতি নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অনুসন্ধান কার্যক্রম শেষে অভিযোগের সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি ওই পদ হারান। এরপর নদভী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টের অধিভুক্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ‘আইআইইউসি টাওয়ার’ সম্মানীর নামে দশ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। দুদক সেই অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে। গত জানুয়ারিতে দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে নদভীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। এরপর গত ১২ মার্চ অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ কারাবন্দী নদভীকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত দুদকের আবেদন মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী হিসেবে পরিচিত ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ২০১৪ সালে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালের বিতর্কিত দুই সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে দুই দফায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে যান। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর রাতে নদভীকে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা ইউনিট (ডিবি)। এরপর থেকে তাকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দফায় দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।