সোহেল আজিম, পেকুয়া
পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের নতুন ভোটার হালনাগাদের ১ হাজারের অধিক ফাইল আটকে আছে। গত ২০ জানুয়ারি থেকে ভোটার হালনাগাদ শুরু হলেও কাগজপত্র সম্পূর্ণ জমা দিতে পারেনি কেউ। মগনামা ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ডের ১ হাজারের অধিক ফাইল চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জটিলতায় আটকে থাকায় ভোটার কার্যক্রমে নিযুক্ত কর্মকর্তারা কাজ করতে পারছেন না। ফাইলের সংখ্যা দৈনিক বাড়লেও দেখা মিলছে না প্রশাসকের। একটা ভোটার ফাইল প্রস্তুত করতে কয়েক দফা চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরের প্রয়োজন হলেও চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা প্রশাসক কোন প্রকার কাজ না করায় জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, মাস্টার আরিফ হত্যা মামলায় ৩০ অক্টোবর চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার হলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ১৩ নভেম্বর এক আদেশে মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুস চৌধুরীরকে অপসারিত করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুর পেয়ারাকে প্রশাসক নিয়োগ করে। সম্প্রতি ইউনুস চৌধুরী জামিনে জেল থেকে মুক্ত হলেও এখনো পর্যন্ত দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেনি। প্রশাসকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ভূমি নুর পেয়ারা বেগমের ধারাবাহিক অনুপস্থিতি ও যোগাযোগহীনতায় ভোগান্তির মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌছেছে বলে মগনামার বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
মগনামা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান বদিউল আলম বলেন, ‘সেবাপ্রার্থীদের জবাব দেয়ার ভাষা আমরা জনপ্রতিনিধিরা হারিয়ে ফেলেছি। আগামী ৩ তারিখের ভিতরে ভোটার হালনাগাদের কাজ শেষ করতে বলা হলেও কোন কাজে তারা এগোতে পারছে না। চেয়ারম্যানের দায়িত্বের কাজের জন্য উপজেলা সদরের ভূমি অফিসে গিয়েও বারবার ফিরে আসতে হচ্ছে। বর্তমানে ভূমি অফিসে ৪ শতাধিক ফাইল আটকে আছে কখন স্বাক্ষর হবে তাও জানি না।’
১নং ওয়ার্ডের মেম্বার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মগনামাবাসী জন্ম নিবন্ধন, প্রত্যয়ন নিতে হয়রানি হচ্ছে। এতে জনগণ আমাদের দায়ী করছে। আমি ডিসি মহোদয় এবং ইউএনও মহোদয়কে অনুরোধ করছি চেয়ারম্যানকে আবার স্বপদে বহাল করে জনসেবা তরান্বিত করার জন্য।’
৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. আমির বলেন, ‘জনগণ এখন সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা জনগণের আশার প্রতিফলন ঘটানতে পারছি না।’
ভুক্তভোগী এক মহিলা বলেন, ‘আমার ছেলেকে ভোটার করার জন্য কাগজপত্র রেডি করতে ১৫ দিন ধরে আসা যাওয়া করছি, ভূমিহীন সনদের জন্য অনেক সময় দিনে তিনবারও এসেছি। কিন্তু প্রশাসককে পাচ্ছি না। অনেকবার আসাতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে তবু ভোগান্তির কোন শেষ নেই।’
মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আব্দু রাজ্জাক বলেন, ‘প্রতিনিয়ত চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর সেবাপ্রার্থীর ও অফিসের কাজে দরকার হচ্ছে। সময়মত ভোটার হতে না পারার শংকায় লোকজন চাপ দিচ্ছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক অসুস্থতার কারণে জন্মনিবন্ধন প্রত্যয়নপত্রসহ প্রয়োজনীয় স্বাক্ষর সময়মত না পেয়ে কাজ আটকে আছে। গতকাল কয়েকশ ফাইল স্বাক্ষর হয়েছে।’
মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার ভূমি নুর পেয়ারা বেগমের সাথে মুটোফেনে যোগাযোগ করলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আমি ফাইল সিগনেচার করছি, এতে আপনার সমস্যা কোথায়? নামজারি খতিয়ান করা যেমন চলমান প্রসেস তেমনি প্রত্যয়নপত্র সিগনেচার করাও চলমান প্রসেস। গ্রামপুলিশ অথবা সচিব রাজ্জাক ফাইল নিয়ে আসলে আমি সিগনেচার করে দিব।’