নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমীর পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটের দাবি রাজনৈতিক ব্ল্যাকমেলিং ছাড়া আর কিছু নয়। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বাংলাদেশের তিনটি গণভোটের দু’টি বিএনপির আমলে হয়েছে এবং দুটোই আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাই এ দাবি গণতান্ত্রিক ধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। গতকাল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয় নগরীর বহদ্দারহাট মোড়ে।
মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ১৯৭৭ সালের ৩০ মে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রেসিডেন্ট পদে অনুষ্ঠিত হ্যাঁ-না ভোট এবং ১৯৯১ সালের সাংবিধানিক গণভোট, উভয়ই আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৯১ সালের গণভোটের মাধ্যমেই সংসদীয় সরকারব্যবস্থা ফিরে আসে। আজ যারা জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট দাবি করছেন, তারা মূলত রাজনৈতিকভাবে জাতিকে বিভ্রান্ত ও ব্ল্যাকমেলিংয়ের চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, জুলাই সনদের খসড়ায় ২৫টি রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর করে একটি জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছেছে। এখন প্রয়োজন সাংবিধানিক আদেশ জারি করে নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট সম্পন্ন করা। এরপর সেই সনদের আইনি মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও নভেম্বর ২০২৫ এর মধ্যে গণভোট আয়োজনসহ পাঁচ দফা গণদাবি আদায়ের লক্ষ্যে আয়োজিত এই সমাবেশে তিনি বলেন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর সিস্টেম এখন জনদাবিতে পরিণত হয়েছে। মিক্সড পিআর সিস্টেমে দল ও প্রার্থীর মর্যাদা দুই-ই রক্ষিত হবে। এর ফলে নমিনেশন বাণিজ্য, পেশিশক্তি, কালোটাকার দৌরাত্ম্য এবং পুনঃফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার পথ রুদ্ধ করা সম্ভব হবে।
ফ্যাসিবাদবিরোধী অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, রিপেট্রিয়েশন চুক্তি অনুযায়ী যেভাবে অনুপ চেটিয়াকে ফেরত আনা হয়েছিল, সেভাবেই শেখ হাসিনাকে ফেরত এনে আইনের আওতায় আনতে হবে। গুম, খুন ও লুটতরাজে জড়িতদের বিচার দৃশ্যমান করতে হবে। পাশাপাশি স্বৈরাচারের দোসর জাপা ও ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং প্রশাসনকে পুনর্গঠন করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম এবং পরিচালনা করেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও নগর সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, নগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি এস এম লুৎফুর রহমান এবং চট্টগ্রাম-১১ আসনের প্রার্থী মুহাম্মদ শফিউল আলম প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন নগর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, মোহাম্মদ মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, নগর কর্মপরিষদ সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান ইলাহী, আমির হোসাইন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহসভাপতি মকবুল আহমদ, থানা আমীর ফারুকে আজম, এম এ গফুর, মাহবুবুর হাসান রুমী ও সেলিম জামান প্রমুখ। সমাবেশ শেষে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বহদ্দারহাট মোড় থেকে শুরু হয়ে মুরাদপুর মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।











