নগরীর চারুকলার নিজস্ব ক্যাম্পাসে চারুকলা প্রতিষ্ঠিত রাখার দাবি

57

পূর্বদেশ অনলাইন
চট্টগ্রামে প্রাতিষ্ঠানিক চারুকলা চর্চার সংকট উত্তরণে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের সংস্কৃতি কর্মীদের মধ্যে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ২৯ জুন রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির গ্যালারী হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বিশিষ্ট শিল্পী ভাস্কর অলক রায়ের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর বাদশা মিয়া সড়কে অবস্থিত বর্তমানে চারুকলা ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যা পূর্বের সরকারী চারুকলা কলেজ হিসেবে প্রসিদ্ধ। শিল্প-সংস্কৃতির আরাধ্য এ প্রতিষ্ঠানটি সুকুমার বীজ বুনে দিয়েছে নগরবাসীর মনে। বাংলাদেশের আধুনিক শিল্প-আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে স্বকীয় শিল্পী রসিদ চৌধুরীর হাতে গড়া এই প্রতিষ্ঠানে সঙ্গী হয়েছিলেন চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের বহু খ্যাতিমান গুণী মানুষেরা। তাঁরা সবাই মেধা-মনন ও আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করেছেন। দীর্ঘদিনের পথচলায় এখান থেকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন বহু শিল্পী সাহিত্যক ও শিল্পী সংগঠন। বাংলাদেশের সংগীত সংগঠন সোলস, নাট্য সংগঠন অরিন্দম, তির্যক সহ শিল্পচর্চার বহু সংগঠন ও সংস্কৃতিসেবীরা এখানে তাদের শিল্প চর্চা করেছেন। বাঙালির প্রানের উৎসব পহেলা বৈশাখ, রবীন্দ্র-নজরুল ও বিবিধ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ সারথি এই প্রতিষ্ঠান। তাই এই প্রতিষ্ঠানে শিল্প-সংস্কৃতি ব্যাতিত অন্যকিছু হোক তা নগরবাসীরা চান না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউট স্থানান্তর কার্যক্রমে  নগরবাসীর মনে বেদনাদায়ক প্রভাব ফেলেছে। শিল্প-সংস্কৃতির উর্বর ক্ষেত্রটি কোনভাবেই যেন বিনষ্ট না হয় সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। এই সভায় বক্তারা চারুকলা পূর্বের স্থানে পুনঃস্থাপন এবং নিয়মিত সাংস্কৃতিক চর্চার অবকাঠামো ও পরিবেশ উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণের করা বিষয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেছেন। আলোচনার শুরুতে ভাস্কর অলক রায় চট্টগ্রামে প্রাতিষ্ঠানিক চারুকলা চর্চার ইতিহাস বর্ণনায় বলেন শিল্পী রশিদ চৌধুরী এই প্রতিষ্ঠানের গোড়াপত্তন করেন। চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বিকাশে এই প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব অপরিসীম। এই প্রতিষ্ঠানকে অচল করে এই স্থানে অন্যকোন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাঁয়তারা চট্টগ্রামের সর্বজনীন সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলকে হত্যা করার সামিল।
সভায় উপস্থিত ছিলেন নাট্যজন মুনির হেলাল, লেখক অনুবাদক আলম খোরশেদ, আলোকচিত্র শিল্পী মইনুল আলম, শিল্পী বিজন মজুমদার, শিল্পী নিলুফার চামান, আবৃত্তি জোটের সভাপতি ফারুক তাহের, নাট্যকর্মী অনির্বাণ ভট্টাচাৰ্য্য, নাট্য কর্মী মোহাম্মদ আলী টিটু, চট্টগ্রাম কালেক্টরস ক্লাবের সভাপতি প্রবাল দে,  শিল্পী সুজা উদ্দিন, শিল্পী তানভির সরোয়ার রানা, শিল্পী সুকান্ত চৌধুরী, শিল্পী ফজলে রাব্বি, শিল্পী মিখাইল মোহাম্মদ রফিক, শিল্পী রেজাউল করিম, লক্ষী দে প্ৰমূখ। সকলে এই প্রতিষ্ঠানকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ঐক্যমত পোষন করে বলেন প্রয়োজনে চট্টগ্রামের সকল সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে জোরদার আন্দোলনের ডাক দেবেন।