কয়েক ঘণ্টার মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীর কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকাল পৌনে ৫টার থেকে মুষলধারায় বৃষ্টি শুরু হয়। থেমে থেমে রাত ৯টার পর্যন্ত এ বৃষ্টিতে নগরীর জিইসি মোড়, ওয়াসার মোড় ও কাতালগঞ্জ এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হলে ভোগান্তিতে পড়েন পথচারী। খবর বিডিনিউজের
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নগরীতে ২৪ ঘণ্টায় ৮২ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ হয়েছে। আরো ২-৩ দিন এমন বৃষ্টিপাত হতে পারে। সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত। এদিকে বৃহস্পতিবার রাত থেকে টানা ভারি বর্ষণে শুরু হয়। সারারাত বৃষ্টির পর শুক্রবারও মুষলধারায় বৃষ্টি হয়।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নগরীতে ২২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ করা হয়েছে, যা ছিল এই মৌসুমে সর্বোচ্চ। তবে সর্বোচ্চ বৃষ্টির পরও শুক্রবার দিনভর নগরীতে জলাবদ্ধতার কোন খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু সেই স্বস্তির পর ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই শনিবার রাতে নগরীর কয়েকটি স্থানে জলাবদ্ধতা হলো। শনিবার রাতে নগরীর জিইসি মোড় ও ওয়াসার মোড়ে দেখা যায়, দুই গুরুত্বপূর্ণ সড়কেই পানি জমে আছে। ধীরগতিতে চলছে বিভিন্ন রকমের যানবাহন। জমে থাকা পানিতে ভোগান্তিতে পড়েন ছাতা মাথায় চলাচলকারী পথচারীরাও।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. ইসমাইল ভূঁইয়া বলেন, গত কয়েকদিন বৃষ্টি হয়েছে নি¤œচাপের প্রভাবে। এখন সেটি চলে গেছে। আজ সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে অতিরিক্ত বৃষ্টি হচ্ছে। এরকম আরো দু-তিনদিন বৃষ্টি হবে। সচরাচর ১ জুন বা ২ জুন চট্টগ্রাম অঞ্চলে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়। এবার তার সপ্তাহখানেক আগেই ২৪ মে চট্টগ্রামে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করে। তারপর এর সাথে যোগ হয় নি¤œচাপ। এখন মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে নিয়মিত বর্ষা শুরু হয়েছে।
বন্দর নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সবচেয়ে বড় ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ৩৬টি খাল নিয়ে চলমান এই প্রকল্পের ভৌত কাজ পরিচালনা করছে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) চলতি বছরের শুরু থেকে খাল-নালা পরিষ্কারের কাজ শুরু করে। তবে এ খাতে বরাদ্দ স্বল্পতা এবং খাল পরিষ্কারের যন্ত্রপাতি কিনতে প্রস্তাবিত প্রকল্প অনুমোদন না হওয়ায় একাধিবার ক্ষোভ প্রকাশ করেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।