নিজস্ব প্রতিবেদক
যানজটমুক্ত চট্টগ্রাম গড়তে নগরীর একাধিক স্থানে বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার চসিক কার্যালয়ে চট্টগ্রাম মহানগর বাস, মিনিবাস, হিউম্যানহলার অটোটেম্পেু সিএনজি, বেবী টেক্সি মালিক-চালক ঐক্য পরিষদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
মেয়র বলেন, আমি যানজটমুক্ত চট্টগ্রাম গড়তে চাই। এ জন্য নগরীর বিভিন্ন প্রবেশমুখ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে একাধিক টার্মিনাল প্রয়োজন। এজন্য প্রয়োজনে সিটি গেট, অক্সিজেন, কালুরঘাট, পতেঙ্গাসহ প্রয়োজনীয় এলাকাগুলোতে জেলা প্রশাসন, রেলওয়ে, গণপূর্ত, রোডস এন্ড হাইওয়ে, চা বোর্ডসহ যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠানের অব্যবহৃত বা বেদখলকৃত যে ভ‚মি আছে সেগুলোতে টার্মিনাল করার জন্য পদক্ষেপ নিবো। কয়েকটা স্পট আমরা দেখেছি। ইঞ্জিনিয়াররা ভিজিট করছে বিভিন্ন এলাকা । ট্রাফিক বিভাগের সাথে আমরা বসবো। বিশেষ করে এডিশনাল কমিশনার ট্রাফিক এবং ডিসি ট্রাফিক চারজন, টোটাল পাঁচজন নিয়ে আমরা বসার একটা পরিকল্পনা আছে। নগরীকে যানজটমুক্ত রাখার বিষয়ে তাদের মতামতও নিবো।
সচেতনতার উপর জোর দিয়ে মেয়র বলেন, নগরীকে যানজটমুক্ত রাখতে আমাদের যে জিনিসটি সবচেয়ে বড় দরকার সেটি হচ্ছে ডিসিপ্লিন বা শৃঙ্খলা। গাড়িগুলো যত্র-তত্র না দাঁড়িয়ে আমাদের যে যাত্রী ছাউনি অথবা বাস স্টপেজ থাকবে সেখানে যাতে তারা দাঁড়ায় এই জিনিসটা যদি হয় এটলিস্ট তাহলে অন্ততপক্ষে একটা ডিসিপ্লিন চলে আসবে। যানজটটা হয় মূলত আপনি যখন সুনির্দিষ্ট বাস স্টপ স্টপে না দাঁড়িয়ে যত্রতত্র দাঁড়িয়ে প্যাসেঞ্জার নিবেন তখনই। আমাদেরকে সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। প্রতিটি জায়গায় আমি দেখেছি যে সচেতনতার উপরে আর কোন কিছুই নেই। আমাদের সবাইকে সচেতন করতে হবে এবং সেটা ময়লা পরিষ্কার থেকে শুরু করে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সব বিষয়ে।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ড্রাইভারদের একটু আপনারা বলবেন যে যাতে করে তারা জোরে গাড়ি না চালায়। অনেকে হয়তো মদ্যপান করে চালায়, সবাই না কিছু কিছু, তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। অনেকের অসুস্থতা থাকে লুকিয়ে রাখে যে রোগ আছে। এ বিষয়গুলো সতর্কতার সাথে দেখবেন। কারণ শুধু গাড়ি ড্রাইভ করলে হবে না। প্যাসেঞ্জারের সেফটি ইম্পর্টেন্ট। নিজের সেফটি অলসো ইম্পর্টেন্ট। ভবিষ্যতে আমরা কীভাবে একটি সুন্দর শহর, যানজটমুক্ত শহর, ডিসিপ্লিনড একটি শহর উপহার দিতে পারি এ ব্যাপারে আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব।
সভায় চট্টগ্রাম মহানগর বাস, মিনিবাস, হিউম্যানহলার অটোটেম্পেু সিএনজি, বেবী টেক্সি মালিক-চালক ঐক্য পরিষদের উত্থাপিত বিভিন্ন দাবির মধ্যে রয়েছে ব্যাটারি চালিত রিকশা বন্ধ করা, ব্যাটারি চালিত রিকশা চার্জ দেয়ার জন্য অবৈধ বিদ্যুতের লাইন সরবরাহ বন্ধ করা, নগরীর বাহিরে থেকে আসা বাস-ট্রাক টার্মিনালে না গিয়ে শহরের মধ্যে এসে যানজট তৈরি করছে এ বিষয়ে দ্রæত পদক্ষেপ নেয়া। গাড়ির উপর ট্রাফিক বিভাগের প্রদত্ত হয়রানিমূলক মামলা বন্ধ করা এবং জরিমানার হার ঢাকার সাথে সমন্বয় করা। যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যানজট তৈরি না করে গাড়ির রুটের শুরুর পয়েন্ট এবং শেষ পয়েন্টে কাগজপত্র চেক করা। ট্রাফিক বিভাগের অসাধু সার্জেন্ট-টিআইসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে রুট পারমিট ছাড়া গাড়ি চালানো, গ্রাম সিএনজি ট্যাক্সি গাড়ি চলাচল বন্ধ করা। পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং পর্যাপ্ত পার্কিং চালু করা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী মারুফসহ ১৫টি সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে গঠিত এ পরিষদের পক্ষে সংগঠনের আহবায়ক জাফর আহম্মদ, সদস্য সচিব মো. নজরুল ইসলাম, সদস্য সাবেক কাউন্সিলর মো. নাজিম উদ্দিনসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।