নিজস্ব প্রতিবেদক
মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও নতুন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, নগর পিতা হিসেবে নয়, আমি ৭০ লাখ মানুষের নগরসেবক হিসেবে থাকতে চাই। সকল বর্ণ, ধর্ম, জাতির নাগরিক যারা এ চট্টগ্রাম শহরে বাস করছে, তাদের পাশে থেকে আমি কাজ করে যেতে চাই। আমি আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি। আমি আপনাদের ঋণ কখনও শোধ করতে পারব না।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
নতুন মেয়রের সংবর্ধনা উপলক্ষে সকাল ১১টা থেকে নগরীর পুরাতন স্টেশন চত্বরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোক সমাগম হতে থাকে এবং দুপুর ১২ টার পর তা জনসমুদ্রে রূপ নেয়। ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে দলে দলে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা থেকে নেতাকর্মীরা এসে জড়ো হন। ১২টা ৫০ মিনিটে চসিক মেয়র শাহাদাত হোসেন সমাবেশস্থলে গিয়ে পৌঁছান।
এতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।
বক্তব্যের শুরুতে ডা. শাহাদাত হোসেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক ও আসলাম চৌধুরীসহ চট্টগ্রামের সকল বিএনপি নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
এ সময় মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, আমি আপনাদেরই সন্তান। এই শহরটা শুধু আমার একার শহর নয়। এই শহর আমাদের সবার। আসুন, আমরা সবাই মিলে একযোগে একটি সুন্দর শহর গড়ে তুলি। এ শহর হবে ক্লিন সিটি, গ্রিন সিটি ও হেলদি সিটি। আমাকে একটু সময় দিন। ইনশাআল্লাহ, অক্ষরে অক্ষরে দায়িত্ব পালন করবো। আপনারা সবসময় আমার হৃদয়ের গভীরে আছেন।
তিনি বলেন, আমি মহানগরে গত ১৮ বছর বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছি। গত ১৮ বছর আপনারা বিএনপির নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে পারেননি। পরিবারের খোঁজ নিতে পারেননি। অনাহারে দিন কাটিয়েছেন। এ অসহায়ত্ব আমি দেখেছি। সারা বাংলাদেশে ৬০০ এর অধিক বিএনপি নেতাকর্মী গুম হয়েছে। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে এক লাখ মামলায় ৬০ লাখ মানুষ আসামি হয়েছে। তবুও আপনারা বিএনপির আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি।
চসিক মেয়র বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইসিটি মামলা দিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরন করা হয়েছিল। তবুও গণমাধ্যম বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলার খবর ছাপিয়েছে। গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানাই।
আবুল হাশেম বক্কর বলেন, চট্টগ্রামে আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি মেয়র হওয়ায় জনতার বিজয় হয়েছে। আইনের শাসনের বিজয় হয়েছে। জনতার মেয়র হিসেবে তিনি আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন। চট্টগ্রামকে গ্রীণ, ক্লিন ও হেলদি সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
এর আগে সকাল ৭ টায় ঢাকা থেকে রওয়ানা দিয়ে বেলা সোয়া বারটার দিকে সোনার বাংলা ট্রেনে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এ সময় নেতাকর্মীরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে ¯েøাগানে ¯েøাগানে অভিবাদন জানিয়ে পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনে আয়োজিত সংবর্ধনা মঞ্চে নিয়ে আসেন। মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার পর চট্টগ্রাম ফিরে হাজার নেতাকর্মীর উষ্ণ সংবর্ধনা ও ভালোবাসায় সিক্ত হলেন ডা. শাহাদাত হোসেন।
পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনে নেতাকর্মীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে মেয়র হযরত শাহ আমানত (র.) ও বদর আউলিয়া (র.) মাজার জিয়ারত করেন। এরপরে বিকেলে লালদীঘির পাড়স্থ চসিক লাইব্রেরি ভবনের সম্মেলন কক্ষে কর্পোরেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময়, সংবাদ সম্মেলন এবং টাইগারপাসে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া মোনাজাতে অংশ নেন।
মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মো. কামরুল ইসলামের পরিচালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এম এ আজিজ, এস এম সাইফুল আলম, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, শাহ আলম, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহবায়ক কমিটির সদস্য জয়নাল আবেদীন জিয়া, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, এস. এম আবুল ফয়েজ, আবুল হাসেম, ইসকান্দর মির্জা, মুজিবুল হক, মো. সালাউদ্দিন, গাজী সিরাজ উল্লাহ, আনোয়ার হোসেন লিপু, মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, মশিউল আলম স্বপন, মোশাররফ হোসেন ডিপটি, এম. এ সবুর, মোহাম্মদ আজম, মো. ইসমাইল বালি, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক ও সিডিএ মেম্বার সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. নসরুল কদির, দক্ষিণ জেলা বিএনপির এড. ইফতেখার হোসেন চৌধুরী মহসিন, মনজুর উদ্দিন চৌধুরী, নাজমুল মুস্তাফা আমিন, মুজিবুল হক চেয়ারম্যান, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, মহিলাদলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, থানা বিএনপির সভাপতি হাজী বাবুল হক, আবদুস সাত্তার সেলিম, মো. সেকান্দর, আবদুল্লাহ আল হারুন, এম আই চৌধুরী মামুন, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ জাকির হোসেন, জসিম উদ্দিন জিয়া, মো. শাহাবুদ্দিন, আবদুল কাদের জসিম, নুর হোসাইন, গিয়াস উদ্দিন ভূইয়া, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সরোয়ার উদ্দিন সেলিম, মহানগর যুবদলের ফজলুল হক সুমন, এমদাদুল হক বাদশা, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া প্রমুখ।