চন্দনাইশ প্রতিনিধি
দূর্গম পাহাড়ি এলাকা ধোপাছড়িতে ছড়ার উপর ২০২৩ সালে ১৬ লক্ষ টাকায় নির্মিত কাঠের সাঁকোটি ২য় দফায় পাহাড়ি ঢলে ভাঙনের কবলে পড়ে। এরপর থেকেই স্থানীয়রা ঝুঁকি নিয়ে ব্যবহার করছিলেন সাঁকোটি। গত রবিবার সকালে ৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে সেই ভঙ্গুর কাঠের সাঁকোটি সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজিব হোসেন। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহবুব আলম শাওন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লতিফা আকতার, মজিবুল হক খোকা, মোজাম্মেল হক প্রমূখ।
জানা যায়, চলতি বছরের ২২ মে পাহাড়ি ঢলে ধোপাছড়িতে ছড়ার উপর নির্মিত কাঠের সাঁকোটি ২য় বারের মত ভেঙ্গে পড়েছিল। এর পূর্বে গত বছর ১২ সেপ্টেম্বর রাতে পাহাড়ি ঢলে কাঠের সাঁকোটি প্রথমবার ভেঙ্গে পড়েছিল। এরপর থেকেই হাজার হাজার বাসিন্দা ঝুঁকি নিয়ে সাঁকোটি ব্যবহার করছিলেন। নানান উপায়ে সেটিকে জোড়াতালি দিলেও ঝুঁকিমুক্ত ছিল না। ফলে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিল স্থানীয় অধিবাসীরে। অবশেষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে টিআর কাবিখা, ১% বরাদ্দ থেকে ৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে সাঁকোটি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজিব হোসেন বলেন, আগামি ২ মাসের মধ্যে সাঁকোটি সংস্কার করে মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। সংস্কার কাজ উপজেলা প্রশাসনের তদারকিতেই করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে ধোপাছড়ির বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ধোপাছড়ি ছড়ার উপর ২০২৩ সালে ১৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে ১’শ মিটার দীর্ঘ ৭ ফুট প্রস্ত কাঠের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। একই বছর নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠানিকভাবে সাঁকোটি উদ্বোধন করা হয়। ফলে পূর্ব ধোপাছড়ির শঙ্খের মুখ, ক্যাম্প পাড়া, শামুক ছড়ির ২ শতাধিক পরিবারের শত শত মানুষ যাতায়াত শুরু করেন। গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর রাতে হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢলে সাঁকোটির ২টি খুঁটি ভেঙ্গে সাঁকোর একাংশ ভেঙ্গে যায়। ফলে সাঁকো দিয়ে সবকিছুর স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। একইভাবে চলতি বছরের ২২ মে বিকালে পাহাড়ি ঢলে সাঁকোর একাংশ ভেঙ্গে পড়ায় পূর্ব ধোপাছড়ির সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দীর্ঘ ৫ মাস পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাঁকোটির সংস্কার কাজ শুরু করায় স্থানীয়রা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার ৫৫ বছর পূর্তি হলেও ধোপাছড়িবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন কিংবা পরিবর্তন হয়নি। এ ছড়ার উপর সাঁকো নির্মাণ সময়ের দাবি। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও সাঁকো নির্মাণ না হওয়ায় এ এলাকার শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি গর্ভবতী নারী, মুমূর্ষ রোগী অকালে প্রাণ হারানোর খবরও প্রকাশিত হয়েছে বহুবার। শুধু সেতুর অভাবে বিনা চিকিৎসায়ও ক্ষতির শিকার হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। পূর্ব ধোপাছড়ির সাথে ধোপাছড়ি বাজার, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা সদর, দোহাজারীসহ বিভিন্ন এলাকায় চলাচলের একমাত্র পথ ধোপাছড়ি ছড়ার উপর এই বাঁশের সাঁকোটি পূর্ণাঙ্গ ব্রিজে রূপ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।











