ধর্ষক-নিপীড়কদের বিচার দাবিতে উত্তাল চবি

1

চবি প্রতিনিধি

সারাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল রবিবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরোপয়েন্ট থেকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ছাত্রী হলগুলো প্রদক্ষিণ করে জিরো পয়েন্টে গিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে পরিণত হয়।
এর আগে একইদিন দুপুর বারোটায় শহীদ মিনার এলাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষার্থীদের আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে ‘তুমি কে, আমি কে- আছিয়া আছিয়া’, ‘ধর্ষকদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস জাস্টিস জাস্টিস’, ‘এক দুইটা ধর্ষক ধর; ধইরা ধইরা জবাই কর’, ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই; ধর্ষকের ফাঁসি চাই’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।
সমাবেশে চবি শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে এসেছে। কিন্তু এই সরকার নৈরাজ্য ও নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে পারছে না। দেশে প্রতিদিন ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এই সরকারকে অবশ্যই সব ধর্ষণের ঘটনার বিচার করতে হবে।
সমাবেশে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহব্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, বর্তমানে দেশে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েই চলছে। এমনকি ৮ বছরের ছোট শিশু পর্যন্ত ধর্ষণ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ধর্ষকদের ফাঁসির শাস্তি চাই। সরকার ধর্ষকদের শাস্তি দিতে ব্যর্থ হলে আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে জুলাইয়ের মতো আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।
এর আগে দুপুরে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক লাইলুন নাহারের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন। এ সময় বক্তারা দেশের বিদ্যমান আইনের প্রয়োগ নিশ্চিতের উপর গুরুত্বারোপ করেন।এতে আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. রকীবা নবী বলেন, দৈনন্দিন জীবনে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের প্রতিবাদ জোরদার করতে হবে। দেশের প্রচলিত আইনগুলো আরো কার্যকর করে আমাদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাই।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. খাদিজা মিতু বলেন, আমাদের দেশে ধর্ষণ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। এটার সামগ্রিক কিছু অন্তর্নিহিত কারণ রয়েছে। এটার জন্য আমাদের সবার মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। বিচার করলেই এটা নিশ্চিত হয়ে যাবে না যে, আর ধর্ষণ হবে না। আমাদের মনোজগতের পরিবর্তন করতে না পারলে, এই ধর্ষণ কমবে না।