ক্রীড়া প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) খেলাধূলা বন্ধ রয়েছে প্রায় বছর খানেক হতে চলেছে। ফুটবল লিগ, ক্রিকেট লিগসহ বিভিন্ন ইভেন্ট চালুর কোন লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। তবে সিজেকেএস’র বিভিন্ন স্থাপনা কব্জায় নিয়ে ব্যবসার খেলা কিন্তু বন্ধ নাই। এতদিন সিজেকেএস’র টানা চার বারের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন বা তার গ্রুপের দোষারোপ চললেও এবার অ্যাডহক কমিটির সদস্যের সংশ্লিষ্টতা ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
জানা গেছে, সিজেকেএস জিমনেশিয়াম সংলগ্ন প্রিয়লেন্তো রেস্টুরেন্টটি জিমসহ শৈবাল দাস সুমন এর কাছে চুক্তিতে দেয়া হয়েছিল। তবে চুক্তিমত তিনি ভাড়া পরিশোধ করেননি যা নিয়ে তাকে বারবার নোটিশ দেয়া হয়েছিল। তারপরও প্রায় অর্ধকোটি টাকার মত ভাড়া বকেয়া ছিল তার। অবাক করা বিষয় হলো, জিম সংলগ্ন লিটল লবস্টার রেস্টুরেন্টটি নাকি কোন কাগজ ছাড়াই আ জ ম নাছির উদ্দিন এর মৌখিক অনুমতিতেই চালাচ্ছিলেন যুবলীগ নেতা শিমুল। গতকাল স্টেডিয়াম পাড়ায় সর্বত্র আলোচিত হচ্ছিল- লিটল লবস্টার বিনা টেন্ডারে ফেনীর এক লোককে দিয়ে দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিজেকেএস সভাপতি, জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সাদিউর রহমান জাদিদ বলেন, এটা অস্থায়ী ভিত্তিতে সমন্বয়ক ইবেন মীরকে (অ্যাডহক কমিটির সদস্য) ভাড়া দেয়া হয়েছে। শর্ত মতে, সিজেকেএস’র প্রয়োজনে দোকানটি যেকোন সময় নিয়ে নেয়া যাবে।
প্রশ্ন উঠেছে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পত্তি এভাবে দিয়ে দেয়া যায় কিনা? সিজেকেএস’র একজন সাবেক কর্মকর্তা ক্ষোভের সুরে বলেন, আমরা নিজেদের থেকে দিয়ে, স্পন্সর এনে সিজেকেএস এর ফান্ড ভর্তি করেছি। আর অ্যাডহক কমিটি এ ফান্ড থেকে নিয়ে যাচ্ছে বলে জেনেছি। অল্প সময়ের জন্য দায়িত্ব নিয়ে তাদের প্রধান কাজ নির্বাচন দিয়ে দায়িত্ব হস্তান্তর না করে কোন ক্রীড়া ইভেন্টও আয়োজন না করে কমিটি সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ সিজেকেএস’র বিভিন্ন স্থাপনা নিয়ে ব্যবসার পাঁয়তারা করছে। এটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। আর দেশের পট পরিবর্তনে ভূমিকা রাখা কেউ (সমন্বয়ক) ধান্ধাবাজিতে লিপ্ত হতে পারে- বিশ্বাস করা যায় না। তবে, নিয়মের তোয়াক্কা না করে সিজেকেএস’র কোন স্থাপনা বরাদ্দ দিলে পরবর্তীতে জবাবদিহিতা বা আইনের খপ্পর থেকে কেউ বাঁচতে পারবেনা বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি প্রশ্ন জুড়ে দেন, তাহলে আগের কমিটির অনিয়ম কোথায়? আ জ ম নাছির বা ছাত্রলীগ-যুবলীগকে কেন দোষারোপ করা হয়?
এদিকে, চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) সাবেক কমিটির বিভিন্ন অনিয়ম এর তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)- চট্টগ্রামের একটি জনপ্রিয় দৈনিকে এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে কিছুদিন আগে। কিন্তু এতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক যেভাবে নড়ার কথা তেমন নড়েনি বলেই মনে হচ্ছে। সিজেকেএস’র আরো বেশ কিছু দোকান এবং জায়গার উপরও শকুনের লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে বলে কানা-ঘুষা চলছে। চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন বাঁচাতে কেউ কি এগিয়ে আসবেন না!