দৈনিক পূর্বদেশ এর জন্য শুভ কামনা

3

কাজী আবু মোহাম্মদ খালেদ নিজাম

চট্টগ্রামের অন্যতম বহুল প্রচারিত পত্রিকা দৈনিক পূর্বদেশ। অল্পসময়েই যে পত্রিকাটি পাঠকের মন জয় করে নিয়েছে। পূর্বদেশ এর পাতা থেকে পাঠক খুঁজে নেন তার প্রয়োজনীয় খবর ও সব তথ্য।
দৈনিক পূর্বদেশ ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর বাঁশখালী নিবাসী বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী জনাব মরহুম মাস্টার নজির আহমদ যিনি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রবীণ শিক্ষাবিদ পত্রিকাটি প্রতিষ্ঠা করেন। পত্রিকাটির সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব জনাব মুজিবুর রহমান। যতদূর মনে পড়ে চট্টগ্রামের মানুষের তথা পাঠকের চাহিদাকে সামনে রেখে দৈনিক পূর্বদেশ প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে এগিয়ে যাচ্ছে পূর্বদেশ।
পত্রিকার প্রকাশকাল হিসাব করলে নির্দ্বিধায় বলা যায় পূর্বদেশ দ্রæতই প্রচার ও প্রসার লাভ করেছে। আমি নিজেও এই পত্রিকার একজন পাঠক। চেষ্টা করি লেখালেখি করারও। পূর্বদেশ প্রকাশের আগেও আমি দেশের বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় লেখালেখি করতাম এবং বর্তমানেও আলহামদুলিল্লাহ্ তা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছি।
পূর্বদেশ পত্রিকার ছাপার মান ও নির্ভুল বানানক্রম প্রশংসার দাবী রাখে। পত্রিকায় চোখ বুলালে তা অনায়াসেই ধরা পড়ে। ঝকঝকে ছবি ও তথ্যনির্ভর সংবাদ প্রকাশের জন্য দৈনিক পূর্বদেশকে ধন্যবাদ দিতে হয়। ছোট-খাটো ভুলত্রুটি বাদ দিলে পত্রিকাটি ইতিমধ্যে দক্ষতা ও সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। বিশাল কর্মীবাহিনী সুনিপুণ ও দক্ষ কাজের মাধ্যমে পত্রিকাটিকে পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।
নিরপেক্ষ-নির্ভুল সংবাদ পরিবেশন, ছবির ব্যবহার, বাংলা একাডেমীর প্রমিত বানানরীতি অনুসরণ ইত্যাদি বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করেন পূর্বদেশ কর্তৃপক্ষ।
অগণিত পাঠকের হাতে প্রতিদিন পৌঁছে যাচ্ছে দৈনিকটি। গণমানুষের কাছে আরো নিবিড়ভাবে সম্পর্ক তৈরিেেত পত্রিকাটির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা জরুরী। এক্ষেত্রে পত্রিকার পৃষ্ঠাসংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে কিনা ভেবে দেখা দরকার বলে মনে করি। দৈনিক পূর্বদেশ প্রকাশের শুরু থেকেই তাতে আমার লেখা প্রকাশিত হচ্ছে। এজন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ পূর্বদেশ পরিবারের প্রতি। বিশেষ করে উপসম্পাদকীয় পাতায় সা¤প্রতিক বিষয়াদির উপর আমার লেখা ব্যাপৃত রয়েছে। আলাদা স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে পূর্বদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পত্রিকার ব্যতিক্রমী এই বৈশিষ্ট্যের কারণে পাঠক আরো আগ্রহী এটির প্রতি। অল্পদিনেই পূর্বদেশের এমন প্রসার সচেতন মানুষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তারা পত্রিকার নানা দিক নিয়ে বিশ্লেষণ করছেন।
পূর্বদেশের নানা বিভাগ ও ফিচার আকৃষ্ট করেছে সকলকে। সম্পাদকীয় মতামত, উপ-সম্পাদকীয় নানা কলাম নিয়মিত থাকছে। পড়ালেখা পাতা, পর্যটন পাতা, পরিবেশ বিষয়ক পাতাসহ বিভিন্ন বিভাগগুলো পুনরায় চালু করলে পত্রিকার মানকে সমৃদ্ধ করবে।
নিরপেক্ষ ও তথ্যবহুল সংবাদ পূর্বদেশের অন্য আরেকটি বৈশিষ্ট্য। গ্রাম ও শহরের সংবাদকে গুরুত্ব দিয়ে ছাপানো হয়। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংবাদ প্রকাশিত হয় নিয়মিত। দেশবিদেশের খেলাধুলার সংবাদও নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে থাকে। এসব কারণে পাঠকের কাছে দৈনিক পূর্বদেশ প্রিয়।
সব খবর একই মলাটে থাকায় তা বহুগুণে আস্থা অর্জনে সক্ষম হচ্ছে। মাঝে মহামারী করোনার কারণে পৃষ্ঠাসংখ্যা সংকুচিত করা হলেও তা পত্রিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে থাকেনি। সেসময়ে নিয়মিত পত্রিকা প্রকাশ চ্যালেঞ্জিং হলেও তা থেকে উত্তরণ করা গেছে।
দৈনিক পূর্বদেশ চট্টগ্রামে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। পাঠকের কাছে পত্রিকাকে আরো গ্রহণযোগ্য করতে নিত্যনতুন কৌশল এবং বিদ্যমান নিরপেক্ষতাকে আরো শক্তিশালী করে তুলতে হবে। নানা চাপ ও ভয়ভীতিকে জয় করে এগিয়ে যেতে হবে।
আর এটি করতে পারলে সর্বসাধারণের কাছে পত্রিকার প্রহণযোগ্যতা দিন দিন বাড়তে থাকবে।
পাঠকের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ ও অন্যান্য ফিচারকে আরো সমৃদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। পাঠক সংখ্যা বৃদ্ধিতে তা ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি। দৈনিক পূর্বদেশ এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পত্রিকাটির জন্য শুভ কামনা রইল। শুভ জন্মদিন, দৈনিক পূর্বদেশ। পত্রিকার সকল সম্মানীত কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে দৈনিক পূর্বদেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।
পরিশেষে, অল্পদিনেই পাঠকের হৃদয় জয় করে এগিয়ে চলা দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রকাশনা অব্যাহত থাকুক -এই কামনা করছি। নতুন দিনে নতুন প্রেক্ষাপটে দৈনিক পূর্বদেশ এর পথচলা হোক সুন্দর, সাবলিল ও গণমানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীক।

লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট