দেশে আরো একজনের মধ্যে নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৯ জন। সরকারের রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা গতকাল সোমবার এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে দেশে নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
তিনি জানান, বাংলাদেশে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও চারজন। আক্রান্তদের মধ্যে এ নিয়ে মোট ১৯ জন সংক্রমণমুক্ত হলেন। নতুন যারা সুস্থ হয়েছেন, তাদের মধ্যে আশির বেশি বয়সী একজনসহ তিনজন বয়স্ক ব্যক্তিও রয়েছেন বলে জানান ফ্লোরা।
নতুন করে কারও মৃত্যুর তথ্য না আসায় বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ মৃতের মোট সংখ্যা আগের মতই পাঁচজনে রয়েছে।আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৫৩টি নমুনা পরীক্ষা করে একজনের সংক্রমণের বিষয়ে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। এর মধ্যে আইইডিসিআরের বাইরের গবেষণাগারে পরীক্ষা করা নমুনাও রয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৩৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে বলে জানান ফ্লোরা। এর মধ্যে আমরা ৪৯ জনের নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে। তার মানে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও একজনের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে।
আইইডিসিআর পরিচালক জানান, যিনি নতুন সংক্রমিত হয়েছেন, তিনি একজন নারী, বয়স বিশের ঘরে। তার সংক্রমণের উৎস খোঁজা হচ্ছে। পূর্ণাঙ্গ তথ্য পরে দেওয়া জানানো হবে। নতুন যারা সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন, তাদের মধ্যে একজন চিকিৎসক এবং একজন নার্সও রয়েছেন। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পরপর দুটি পরীক্ষায় যদি কারও নমুনায় নভেল করোনারভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া না যায় তাহলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে ধরে নেওয়া হয়।
মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়াদের মধ্যে একজনের বয়স আশি বছরের বেশি। দুজনের বয়স ষাটের বেশি। আমরা সব সময় তাদের ঝুঁকিপূর্ণ বলে থাকি। সেজন্য বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে এক ধরনের দুশ্চিন্তা কাজ করতে পারে। আমরা তাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে বয়োজ্যেষ্ঠ হলেই তাদের জন্য রোগটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে তা নয়। তাদের স্বাস্থ্যের কথা মনে রেখে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে বলছি।
যারা সুস্থ হয়েছেন তাদের তিনজনই নানা রোগে ভুগছিলেন। তিনজনের উচ্চ রক্তচাপ, একজনের হাঁপানি, দু’জনের ডায়াবেটিস রয়েছে। এদের মধ্যে দু’জন বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তারপরও কিন্তু তারা সুস্থ হয়েছেন- বলেন সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি জানান, সরকারি একটি কেন্দ্রে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ছিলেন ৩৬ জন, তাদের মধ্যে কোনো সংক্রমণ না থাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এখন কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩২ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে গেছেন আরও ছয়জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৬২ জন। খবর বিডিনিউজের
বিশ্বজুড়ে মৃত্যু ছাড়ালো ৩৩ হাজার, আক্রান্ত হয়েছে সাত লাখ ২১ হাজার : প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩৩ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় সাত লাখ ২১ হাজার। এদের মধ্যে এক লাখ ৫০ হাজার ৯১৮ জন সুস্থ হয়েছেন। সোমবার (৩০ মার্চ) জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড মেডিসিনের করোনা ভাইরাস রিসোর্স সেন্টারের হিসাবে দেখা যায়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে এই পর্যন্ত প্রায় ৩৩ হাজার ৯৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। খবর বাংলানিউজের
আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারস ডট ইনফোর হিসাব অনুযায়ী, ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার ০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে সাত লাখ ৩৮ হাজার ২৩৩ জন।
করোনায় মৃত্যু হু হু করেই বেড়েই চলছে। ভাইরাসটিতে ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চলের মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে ইতালি ও স্পেনের অবস্থা খুবই ভয়াবহ।
ইতালি ও স্পেনে শত শত মানুষ করোনার থাবায় হয়ে মারা যাচ্ছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ইরানসহ আরও কয়েকটি দেশের অবস্থাও খারাপ। ইতালিতে করোনায় নতুন করে ৭৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইতালির সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি রোববার (২৯ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছে।