নিজস্ব প্রতিবেদক ও লোহাগাড়া প্রতিনিধি
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘ইসকন যতই উস্কানিমূলক কর্মকান্ড করুক না কেন আমাদেরকে উত্তম সবরের মাধ্যমে তার জবাব দিতে হবে। ভারত বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার জন্য ফাঁদ পেতেছে। আমরা সেই ফাঁদে পা দিব না।’ গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রামে ইসকন সদস্যদের হামলায় নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জিয়ারত শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দোয়া করি বাংলাদেশের লোহাগাড়া, সাতকানিয়া তথা দক্ষিণ অঞ্চল হবে ইসলামের ঘাঁটি। এই যে ইসকন নামক উগ্র জঙ্গিবাদী যে সাম্প্রতিক গোষ্ঠী সন্ত্রাসের আগুন জ্বালাতে চেষ্টা করছে। এদের ব্যাপারে আমীরে জামায়াতের হেদায়েত হলো আমরা উত্তম ধৈর্য ধারণ করবো, আমরা সংযত থাকবো।’
জামায়াতের এ কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলনের বিজয়ের বিপুল সম্ভাবনা দেখে পাতানো ফাঁদে আমাদের আটকাতে চায়। আমরা কখনো এ পাতানো ফাঁদে পা দিতে চাই না। ধৈর্যের সঙ্গে এ দেশে আমরা আল্লাহর দ্বীনের সৌন্দর্য রক্ষা করবো। আমাদের রক্ত যাবে, জেল জুলুম রিমান্ড শাহাদাত সবকিছুর বিনিময়ে দ্বীনের সৌন্দর্য দুনিয়ার সামনে প্রকাশিত করবো।’
গোলাম পরওয়ার নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের ভাগ্যে যা আছে তাই হবে। আমরা তাকদিরের ওপর বিশ্বাস করি। কিন্তু ফিতনা-ফ্যাসাদ বিশৃঙ্খলা অপশক্তি উগ্রবাদীদের পাতানো ফাঁদে যেন পা না দেই। একটু কষ্ট হলেও আমরা ধৈর্যের সঙ্গে সময় কাটাবো। কেন্দ্রীয় সংগঠনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করবো।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সংসদীয় দলের সাবেক হুইপ, চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমির ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক জাফর সাদেক, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হক, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ জাকারিয়া, শহীদ সাইফুল ইসলাম আলিফের আব্বা মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন, ড. হেলাল উদ্দিন মোহাম্মদ নোমান, লোহাগাড়া উপজেলা জামায়েতের আমীর অধ্যাপক আসাদুল্লাহ ইসলামাবাদী, সেক্রেটারি মাওলানা আবুল কালামসহ স্থানীয় জামায়াত ও ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ।
জাতীয় নির্বাচনের দিকে যখন যাত্রা, তখনই ষড়যন্ত্র শুরু : জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘একটি জাতীয় নির্বাচনের দিকে যখন জাতি অভিযাত্রা শুরু করেছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে যখন দায়িত্ব হস্তান্তরের একটি নিউ ডাইমেনশনে যাত্রা শুরু করেছে, সেই মুহূর্তে এ তৎপরতা উদ্বেগজনক। এজন্য বার বার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’ গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে চট্টগ্রাম সফরে এসে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের সামনে একের পর এক চ্যালেঞ্জ আসছে। শক্তভাবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। সরকার ও দেশবাসীর সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকবে। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী সবসময় নির্বাচনমুখী দল। আমাদের বাংলাদেশে সকল আসনে প্রার্থী দেওয়ার মতো প্রস্তুতি আছে।’
জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের নিষ্ঠুর ও বর্বরোচিত হত্যাকাÐে পুরো দেশের মানুষ আজ স্তম্ভিত। আমরা এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার দাবি করছি। দ্রæততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করছি। এ হত্যাকান্ডে উস্কানি ও উদ্ভূত পরিস্থিতি যাদের জন্য তৈরি হয়েছে তাদের এ তৎপরতা, সাম্প্রদায়িক এ তৎপরতা, সহিংস এ তৎপরতা এবং দেশের অখÐতাবিরোধী এ তৎপরতা চলতে পারে কিনা এটা বর্তমান সরকারকে গভীর বিবেচনার সময় এসেছে। তা না হলে জাতির সামনে একটি কঠিন পরিস্থিতির আশঙ্কা সারাদেশবাসী করছে। এ রকম একটি জঙ্গিবাদী ও সন্ত্রাসী সংগঠনের কর্মকান্ড কি করে চলতে পারে? আমাদের দেশে আইন আছে। সে আইনের ভিত্তিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন দেশবিরোধী যে ষড়যন্ত্র লিপ্ত হয়েছে সেখানে পতিত স্বৈরাচারের নেতা-কর্মীরা জড়িত। বিভিন্ন বেশ ধরে কারা এ শান্তিপূর্ণ দেশকে অরাজকতার দিকে নিয়ে যেতে চায়, আবার ফ্যাসিবাদের দিকে নিয়ে যেতে চায়, পুরো জাতির কাছে নানা প্রশ্ন এখন সৃষ্টি হয়েছে।’ মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সরকারের যথেষ্ট গোয়েন্দা সংস্থা আছে। আমি মনে করি আমাদের দেশের গোয়েন্দা সংস্থার আধুনিক প্রযুক্তির অনেক ইকুইপমেন্টস ও লজিস্টিক সাপোর্ট উন্নত প্রশিক্ষণ আছে এগুলোকে কাজে লাগিয়ে দেশকে শান্তি দেওয়ার জন্য তাদের সমস্ত ইপোর্ট দিয়ে একুমেডেট করা উচিত। সেটি করলে মানুষ আশাবাদী হবে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান, চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমীর সাবেক এমপি শাহাজান চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সাবেক আমীর, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য জাফর সাদেক, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জামায়াত নেতা অধ্যাপক ড. আবু হানিফা নোমান ও চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াত ও শিবিরের নেতৃবৃন্দ।