দৃষ্টিনন্দন স্টলে বর্ণিল বইমেলা

1

আসাদুজ্জামান রিপন

বইমেলার তৃতীয়দিন ছিল গতকাল। কয়েকটি স্টল ছাড়া প্রায় সব স্টল তৈরি। কারিগরের কোমল হাতের ছোঁয়ায় ঝকঝকে রঙিন রূপ পেয়েছে বইমেলার স্টলগুলো। সুসজ্জিত বৈচিত্র্যময় দৃষ্টিনন্দন স্টলে লেখক পাঠক আর দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর বইমেলা প্রাঙ্গণ। নিচ্ছেন নতুন বইয়ের অমৃত গন্ধ। বইয়ের পৃষ্ঠার ভাজ উল্টিয়ে দেখছেন আগতরা। নিচ্ছেন মেলায় আগত নতুন বইয়ের খোঁজ-খবর। কিনছেন পছন্দের বই।
প্রকাশকদের মতে, মেলা শুরু হয়েছে মাত্র। এখানও সবগুলো নতুন বই মেলায় আসেনি, কয়েকটি এসেছে। আশা করছি, এ সপ্তাহের শেষের দিকে সবগুলো নতুন বই চলে আসবে।
বইমেলায় ঢুকে একটু সামনে গেলে চোখে পড়বে নান্দনিক সাজে সজ্জিত স্টল। বিভিন্ন কাঠের টুকরো দিয়ে তৈরি স্টল। একেকটা একেক সাইজের কাঠের টুকরো। নেই কোন র্নিদিষ্ট সাইজের কাঠ। এলোমেলাভাবে সাজিয়ে তৈরি করেছেন। দূর থেকে মনে হয় পরিত্যক্ত কোন কাঠের স্ত‚প। স্টলের উপরে লেখা ‘বিদ্যানন্দ’। কথা হয় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের গর্ভনিং বডির সদস্য মোহাম্মদ জামাল উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, ‘কাগজ রিসাইকেল করি বৃক্ষের প্রাণ বাঁচাই’ এ থিমের আদলে এবারের স্টল তৈরি করা হয়েছে। বৃক্ষ নিধন কতটা ভয়াবহ, এর ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃক্ষ নিধনের বিরুদ্ধে নতুন প্রজন্মকে একটা বার্তা দিতে এভাবে র্নিমাণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতি মেট্রিকটন কাগজ তৈরিতে প্রায় ১৭টি গাছ হত্যা করা হয়। জ্ঞানের ক্ষুধা মিটাতে প্রতিনিয়ত গাছ আত্মত্যাগ করছে। তার প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা আরেকটা গাছ রোপণ করি। মূলত বৃক্ষরোপণকে উৎসাহিত করতে এ থিমে তৈরি করা হয়েছে।
গতকাল বিকেল ৪টার সময় কথা হয় সৃজনশীল প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী ফাহিমের সাথে। তখন বই সাজাতে ব্যস্ত তিনি। কাজের ফাঁকে জানা যায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। দূর থেকে আসতে একটু দেরি হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এখনও সেভাবে পাঠক আসেনি। মেলার প্রথম দিকে পাঠক কম থাকে। তাছাড়া ঢাকা থেকে সবগুলো বই এখনও পৌছাইনি।
ঝিলমিল প্রকাশনীর এক বিক্রয়কর্মী জানান, তাদের কিছু নতুন বই এসেছে, আরও আসবে। তবে তাদের পুরোনো বইগুলোও নেড়েচেড়ে দেখছেন পাঠক।
গতকাল দেখা যায়, অনেকেই দল বেঁধে বইমেলায় এসেছেন। কেউ কেউ বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে, কেউবা পরিবার পরিজন, প্রিয় মানুষকে নিয়ে। শিশু, কিশোর-কিশোরীরাও এসেছে। মেলায় আগতরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন নিজের প্রিয় লেখকদেরসহ মেলায় আসা নতুন বইগুলো। এ স্টল থেকে ওই স্টলে ঘোরাঘুরিতে কাটিয়ে দিচ্ছে সময়। পছন্দমত বইও কিনছে। অনেকে আবার দল বেঁধে এসে বিভিন্ন স্টল ঘুরে চলে যাচ্ছেন।
কথা হয় চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী অর্পার সাথে। তিনি জানান, কলেজ প্রাঙ্গণে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর প‚জা অর্চনা শেষ করে বন্ধুদের সাথে মেলায় এসেছেন। ঘুরে ঘুরে পছন্দের বই দেখছি। এখনও মাত্র দুটি বই কিনেছেন।
আরেক শিক্ষার্থী ভূমিকা তালুকদার বলেন, সুযোগ পেলেই প্রায় দিনই বইমেলায় চলে আসি। আজ বিদ্যার দেবী অর্চনা শেষে বন্ধুদের সাথে এসেছি। প্রথম দিকে বইমেলা তেমন একটা না জমলেও, দিন যত যাচ্ছে মেলায় মানুষ বাড়ছে।