দুর্ভোগ কমাতে ভ্যাটবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার দাবি

1

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে মুঠোফোন-ইন্টারনেট, ওষুধ, এলপি গ্যাস, মিষ্টি, বিস্কুটসহ শতাধিক পণ্যের ভ্যাট-সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে অধ্যাদেশ জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। মানুষের এমনিতেই নিত্যপণ্যের ক্রমাগত দাম বৃদ্ধি নিয়ে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি, সেখানে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য ও সেবার মূল্য বাড়িয়ে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি করবে। তাই এ অধ্যাদেশ বাতিল অথবা আগামী রমজান পর্যন্ত এ অধ্যাদেশ কার্যকর না করার দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটির নেতৃবৃন্দ।
গতকাল এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগরের প্রেসিডেন্ট জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ম সম্পাদক আবু মোশাররফ রাসেল, দক্ষিণ জেলা প্রেসিডিন্ট আলহাজ আবদুল মান্নান, যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি চৌধুরী কেএনএম রিয়াদ, যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু হানিফ নোমান প্রমুখ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ডিসেম্বরে ১৩ শতাংশের কাছাকাছি এবং তার আগের মাসে ছিল ১৪ শতাংশের কাছাকাছি মূল্যস্ফীতি ছিল। মূল্যবৃদ্ধির চাপে জীবন-জীবিকা নির্বাহে মানুষ দিশাহারা। এর মধ্যেই ভ্যাট-সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতিকে আরেক দফা উসকে দিতে পারে।
নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগামী মার্চে পবিত্র রমজান উপলক্ষে এখন থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো ও মুজত করা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা কমলেও বাড়ছে চালের দাম। প্রকার ভেদে চাল কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। এ সময়ে ভ্যাটবৃদ্ধি করায় অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন ছড়াতে পারেন। এতে রমজান মাসে প্রান্তিক ও সীমিত আয়ের মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সরকার ইতিপূর্বে ২৯টি পণ্যের ভ্যাট ও আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করলেও ভোক্তা পর্যায়ে কোন প্রতিফলন আসেনি। শুল্ক প্রত্যাহারের পুরো সুবিধাটুকু বড় বড় করপোরেট গ্রুপ ও আমদানিকারকরা হাতিয়ে নেন। মূল্যস্ফীতি ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখি থাকায় মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। যেহেতু আয় বাড়েনি, সে কারণে পরিবারের পুষ্টিসহ অনেক প্রয়োজন কাটছাঁট করতে পারলেও পরিবারের চিকিৎসা খরচ উপক্ষো করা যাচ্ছে না। আবার জীবন রক্ষাকারী ওষুধ কিনতে প্রতি মাসেই বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। ওষুধের দামও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সেই ওষুধের ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ফলে আরেক দফা মূল্যবৃদ্ধি ঘটবে। যা নতুন বছরে সাধারণ মানুষের জন্য ‘ মরার উপর খাঁড়ার ঘা’।
তাই সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য বিদ্যমান ভ্যাট নেটের আওতা বাড়ানো, সহজীকরণ করা, কর ফাঁকি বন্ধ করা, এনবিআরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট-দুর্ভোগ বিবেচনা করা প্রয়োজন। একই সাথে পরোক্ষ করবৃদ্ধি করে নিম্ন আয়ের মানুষের দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যাওয়া রোধে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া দরকার। কর প্রশাসনে সংস্কার ও কর ফাঁকির বিষয়টি বন্ধ করে অবিলম্বে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্কবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানান ক্যাব নেতৃবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি