কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুলে দেওয়া হল দুই সপ্তাহ পর। গতকাল বুধবার দুপুরে বিটিআরসি ভবনে ফেসবুক ও টিকটকের সঙ্গে এক বৈঠকের পর ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানান। এর কিছুক্ষণ পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় এসব সোশাল মিডিয়া ফের চালু হতে শুরু করে বলে ব্যবহারকারীরা জানান। খবর বিডিনিউজের।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেছিলেন, যে সকল সামাজিক মাধ্যমের কর্মকান্ডের জন্য আমরা সাময়িকভাবে কিছু বিধিনিষেধ দিয়েছিলাম, সার্বিক বিবেচনায় আমরা আজকে (বুধবার) বিকেলের মধ্যে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। ব্রিফিং শেষে বিটিআরসিকে খুলে দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। তবে এক-দুই ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। আশা করছি বিকেলের মাঝে সব ওপেন হয়ে যাবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘গুজব ও অপপ্রচার’ বন্ধে সরকারের তরফ থেকে কোম্পানিগুলোকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা না হওয়ায় এসব কোম্পানির কাছে ব্যাখ্যা চাওয়ার কথা এর আগে সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন প্রতিমন্ত্রী পলক।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেছিলেন, আমরা টিকটক, ইউটিউব এবং ফেসবুককে তাদের একটা ব্যাখ্যা মৌখিকভাবে ও লিখিতভাবে উত্তর দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছিলাম। টিকটক আমাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে যে, তারা মৌখিকভাবে এবং লিখিতভাবে উপস্থিত হয়ে জবাব দিতে চায়। আর আমার জানামতে ফেসবুক ও ইউটিউব এখন পর্যন্ত বিটিআরসিতে কোনো উত্তর দেয়নি।
গতকাল প্রতিমন্ত্রী ফেসবুকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করেন। টিকটকের প্রতিনিধিরা সশরীরে বিটিআরসি ভবনে উপস্থিত হয়েছিলেন। আর ইউটিউব কর্তৃপক্ষ বৈঠকের জন্য আরেকদিন সময় চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
দুই সপ্তাহের ব্ল্যাকআউট : সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে দেশজুড়ে সংঘাত-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে গত ১৭ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর দিন সহিংসতা মাত্রা ছাড়ালে ১৮ জুলাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায় এবং ওই দিন থেকে বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধ রয়েছে।
এর পাঁচ দিন পর ২৩ জুলাই ব্রডব্যান্ড এবং ১০ দিন পর ২৮ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট চালু হলেও ফেসবুক ও টিকটক বন্ধ রাখা হয়।