পূর্বদেশ ডেস্ক
গণ অভ্যুত্থানের যে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তা শেষ করতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহবান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি।
দলটির আহব্বায়ক নাহিদ ইসলাম বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল নয়, জনগণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতেও তারা প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেছেন।
বৈঠকে তার সরকারের প্রতি সমর্থনও জানিয়েছে অভ্যুত্থানের নেতাদের গঠিত দল এনসিপি।
গতকাল শনিবার রাত ১০টা ১০ মিনিটের দিকে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে আসেন দলের নেতা নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আলোচনায় আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সমর্থন জানিয়েছি। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে একটা দাবি ছিল আমাদের, যেটা ৩০ কার্যদিবসের ভেতরে বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। এ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, জুলাই আন্দোলনে যারা আহত ও শহীদ হয়েছেন তাদের পুনর্বাসনের বিষয়টিও ধীরগতির ছিল।
নাহিদ বলেন, আরেকটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, শেখ হাসিনার আমলে যে সকল নির্বাচন হয়েছিল সেগুলো বিতর্কিত ছিল।তাই সেই পূর্বের নির্বাচনগুলোকে আইনগতভাবে অবৈধ ঘোষণার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে বলেছি।
তিনি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে যে সকল ছাত্র প্রতিনিধিরা উপদেষ্টা হয়েছেন তারা কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করেন না। এ বিষয়ে আমরা স্পষ্ট করেছি। তারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে উপদেষ্টা হয়েছেন।
আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি উনি যেন দায়িত্বে থাকেন এবং দায়িত্বে থেকে গণ-অভ্যুত্থানের যে আকাক্সক্ষা সেটি বাস্তবায়নের কাজ করেন’, বলেন তিনি।
দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠকের পর এনসিপি নেতাদের সঙ্গে বসেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
রাত পৌনে ১০টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৈঠকটি শুরু হয়। এনসিপির চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আহব্বায়ক নাহিদ ইসলাম। অন্যদের মধ্যে ছিলেন মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহব্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা।
ছাত্রজনতার প্রবল আন্দোলনে গত বছর ৫ আগস্ট সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার তিন দিন পর ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
এর সাড়ে নয় মাস পর নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও অভ্যুত্থানের নেতাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ভিন্ন অবস্থান এবং ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ পড়ানো নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে বক্তব্য-পাল্টা বক্তব্যের ঘটনা ঘটে।
দুই পক্ষই কিছু উপদেষ্টার পাল্টাপাল্টি পদত্যাগের দাবি তোলে। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার মধ্যে সেনানিবাসে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন বলে খবর আসে।