পূর্বদেশ ডেস্ক
ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’ বিচারের জন্য আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার বলেছেন, ইতোমধ্যে একজন কর্মকর্তাকে এ অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অন্য দলের নাম এলে তাদের বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গতকাল দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
তাজুল ইসলাম বলেন, দল হিসেবে, সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান ছিল। আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ হয়েছে এবং তারা তদন্ত কাজ দ্রুতই সম্পন্ন করবেন। তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। এবং তদন্ত রিপোর্ট প্রাপ্তি সাপেক্ষে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এক সাংবাদিক জানতে চান, এখন পর্যন্ত অনেকেই তাদের সাক্ষ্যে আওয়ামী লীগের মধ্যে নানা অভিযোগ এনেছে, সেসব কি এ মামলায় কাজে দেবে?
উত্তরে প্রধান কৌঁসুলি তাজুল ইসলাম বলেন, প্রত্যেকটাই কাজে লাগবে। কারণ আদালতে যখন সাক্ষীরা তাদের বক্তব্য দিয়েছেন, দলের ইনভলভমেন্টের ব্যাপারে বলেছেন, এগুলো জুডিসিয়াল ডকুমেন্ট হয়ে গেছে।
সুতরাং ভবিষ্যতে দলের বিরুদ্ধে যে তদন্ত হবে, দলের বিরুদ্ধে যে সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ আসবে তার মধ্যে বিদ্যমান যে সমস্ত সাক্ষ্য ইতোমধ্যে হয়ে গেছে যেগুলো, সেই সাক্ষ্যপ্রমাণগুলো অন্যতম এভিডেন্স হিসেবে গণ্য হবে।
কোন কোন মানদন্ড ধরে তদন্ত এগোবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে তাজুল ইসলাম বলেন, আইনের মধ্যে যেভাবে আছে, সেভাবেই আগাবে এবং এটা যখন তদন্ত প্রক্রিয়া আরও সামনে আগাবে, তখন হয়তো আরও বিস্তারিত আপনাদেরকে জানানো হবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আইন এক বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের মত সংশোধন করে সোমবার রাতে অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বিচার চলাকালে আইন সংশোধন করার কারণে বিচার প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হবে কি না?
উত্তরে তাজুল ইসলাম বলেন, কোনো সুযোগ নেই। কারণ আওয়ামী লীগের দল হিসেবে বিচার প্রক্রিয়া চলমান নাই। বিচার প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় যদি কোনো আইন সংশোধন হয়- যেটা বলতে চেয়েছেন, যেমন ধরেন একজন ব্যক্তির বিচার চলমান আছে, সেই ব্যক্তির বিচারকে প্রভাবিত করতে পারে, এমন কোনো বিষয় সংশোধন হলে তখন আপনি প্রশ্ন তুলতে পারেন।
কিন্তু এইখানে যে আইনটা সংশোধন করা হয়েছে বা যা কিছু করা হয়েছে, সেই আইনটা এখনো প্রযোজ্য হয়নি। আপনি কি ওই নির্বাচন অংশগ্রহণের ব্যাপারে বলছেন? সেটা হতেই পারে। সেটা কোনো প্রভাব পড়বে না, ন্যায়বিচারের পরিপন্থিও হবে না। কারণ ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনালস অ্যাক্ট, ১৯৭৩ এটা সংবিধান দ্বারা প্রটেক্টেড একটা আইন।
সুতরাং এই আইনের রেট্রোস্পেক্টিভ ইফেক্ট আছে এবং রেট্রোস্পেক্টিভ ইফেক্ট দেয়াটাকে আবার সংবিধানসম্মত করা হয়েছে। সুতরাং এটার সবকিছুই বৈধ বলে গণ্য হবে। এটাকে আদালতে চ্যালেঞ্জও করা যাবে না।
আরেক সাংবাদিক জানতে চান, দল হিসেবে বিচারের ক্ষেত্রে সাজা কতটুকু? আইনে কী বলা আছে?











