পূর্বদেশ ডেস্ক
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিবন্ধন পেতে আগ্রহী রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন কমিশন যে সময় বেঁধে দিয়েছে, তা আরও অন্তত তিন মাস বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি।
গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সচিবের দপ্তরে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে গঠিত নতুন দলটি। খবর বিডিনিউজের।
এনসিপির চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিইসির একান্ত সচিব আশ্রাফুল আলম বলেন, দলটির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রোববার সিইসির বৈঠকের সূচি রয়েছে। বেলা ১২টায় ওই বৈঠক হবে।
এনসিপির যুগ্ম আহব্বায়ক ও সংস্কার সময়ন্বক কমিটির কো-অর্ডিনেটর সারোয়ার তুষার বলেন, মৌলিক সংস্কার ও নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা ন্যূনতম ৯০ দিন বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়েছে। তাদের একটি প্রতিনিধি দল ইসির সঙ্গে দেখা করে উদ্বেগের বিষয়গুলো তুলে ধরবে। নিবন্ধন সময়সীমা বাড়ানোসহ বেশ কিছু বিষয়ে আলাপ হবে।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিবন্ধন পেতে আগ্রহী রাজনৈতিক দলগুলোকে আবেদন করার জন্য গত ১০ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ইসি, যার শেষ সীমা ২০ এপ্রিল রোববার।
এরই মধ্যে পাঁচটি দল আবেদন করেছে। বিজ্ঞপ্তি জারির দুই সপ্তাহের মাথায় ২৫ মার্চ ‘আওয়ামী লিগ’ নামে একটি দলের নিবন্ধন আবেদন করেন। এরপর আমজনতার দল, নতুন বাংলা, সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোট, গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি নামে চারটি দল নিবন্ধনের আবেদন করে।
নির্বাচন কমিশন বলছে, ঘোষিত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
চিঠিতে যা বলছে এনসিপি : নির্বাচন কমিশনে দেওয়া চিঠিতে এনসিপি বলছে, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রতিবেদনসহ সুপারিশ দিলেও অদ্যাবধি মৌলিক সংস্কার কার্যক্রমের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। মৌলিক সংস্কার ও বিদ্যমান আইন যুগোপযোগী না করেই বর্তমান নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য গত ১০ মার্চ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সংস্কারের পূর্বেই দ্রæত তড়িৎ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিমÐলে সমালোচনার জন্ম দেয়।
২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ও প্রাসঙ্গিক আইনের অধীনে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন শর্তগুলো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক। পূর্বের স্বৈরাচারী সরকারের আমলে তৈরি এই বিধিগুলো রাজনৈতিক বহুত্ববাদকে সংকুচিত ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য প্রণীত।
জেলা পর্যায় ১০% ও উপজেলা পর্যায়ে ৫% কার্যালয় স্থাপনের শর্ত সহজীকরণের পাশাপাশি প্রতি পাঁচ বছরে নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন নবায়নের বাধ্যবাধকতার প্রস্তাবের কথাও তুলে ধরে এনসিপি বলেছে, বর্তমানের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রণয়ন বা সংশোধনপূর্বক নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হওয়া দরকার।
একইসঙ্গে মৌলিক সংস্কারের আলোকে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, বিদ্যমান নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন হালনাগাদ করাও আবশ্যক। এমতাবস্থায় অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত মৌলিক সংস্কার সাধন এবং নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা অন্যূন ৯০ দিন বর্ধিত করার অনুরোধ।