পটিয়া প্রতিনিধি
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পটিয়াস্থ প্রধান সাব স্টেশনে গতকাল বৃহস্পতিবার একদল লাইনম্যান ঢুকে সবগুলো ব্রেকার ডাউন করে দেয়। এতে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতাধীন দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৮ উপজেলা। ফলে এ অঞ্চলের লাখ লাখ গ্রাহককে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পরে পটিয়া থানার ওসির সাহসী পদক্ষেপে সন্ধ্যায় পুনরায় সংযোগ চালু হয়।
জানা গেছে, গতকাল দুপুর থেকে শতাধিক লাইনম্যান সাব স্টেশনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন। এরপরই তারা সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করে সবগুলো লাইন বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতায় ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি রয়েছে। লাইনম্যানদের অভিযোগ আরইবি, ২০১৩ সনের ৫৭নং আইনের বিভিন্ন ধারা লংঘন করে পৃথক সংস্থায় পরিণত করে বৈষম্য, শোষণ, নিপীড়ন চালিয়ে আসছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) নামে পৃথক সংস্থা তৈরি করে নির্যাতনের বৈধতা দিতে গত জুন মাসে আরইবি চেয়ারম্যান অত্যন্ত গোপনে উক্ত আইন সংশোধনের চেষ্টা করেন। সংশোধনী প্রস্তাবে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড অধ্যাদেশ ১৯৭৭ ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড আইন ২০১৩ প্রবর্তনের তারিখ হতে কার্যকর ও অঙ্গীভূত হয়েছে বলে বিবেচিত হয়। প্রতিদিন প্রতিমাসে প্রতিবছর পবিসের অসংখ্য কর্মকর্তা-কর্মচারী মাঠে কাজ করতে গিয়ে লোডশেডিং, বকেয়া আদায় বা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে বা অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যাবহার রোধ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হন। বিপরীতে আরইবি’র একজনও এ ধরনের লাঞ্চনার শিকার হন না। বিকালে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জায়েদ নূর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমরা সকলে সরকারের চাকরিজীবী। জনগণকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করে দাবি আদায় করা যাবে না। বল প্রয়োগ করেও বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে পারবেন না। আপনাদের দাবির বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বিদ্যুৎ বন্ধ করে রাখলে গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হতে পারে। তখন সামাল দেয়া কঠিন হয়ে যাবে।’ এভাবে তিনি আন্দোলনকারী লাইনম্যানদের প্রতি পুনরায় লাইন চালু করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু এসময় ওসির প্রতি লাইনম্যানরা ঔদ্বত্ত্যপূর্ণ আচরণ করেন।
পরে সন্ধ্যায় এডিশন্যাল এসপি (পটিয়া সার্কেল) ঘটনাস্থলে পৌঁছে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জায়েদ নুরসহ অন্যদের নিয়ে আন্দোলনকারীদের শান্ত করেন এবং বিদ্যুতের লাইন চালু করেন।