বাঁশখালী প্রতিনিধি
ব্যথা নিরাময়ের চিকিৎসা করতে গিয়ে একজনের শরীর ঝলসে দিয়েছেন এক ভুয়া চিকিৎসক। গত রবিবার রাতে বাঁশখালীতে এ ঘটনা ঘটে। ওই ভুয়া চিকিৎসককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক লক্ষ টাকা জরিমানা ও শরীর ঝলসে যাওয়া ব্যক্তির চিকিৎসা খরচ বহনের দায়িত্ব দেন বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জামশেদুল আলম।
জানা গেছে, গত রবিবার সন্ধ্যায় কোমর ও পিটের ব্যথা নিয়ে উপজেলার শেখেরখীল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডস্থ আলিবলি পাড়ার মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে রিকশাচালক খলিলুর রহমান (৫০) নাপোড়া বাজারস্থ শেখেরখীল এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে কামরুল ইসলামের চেম্বারে যান। এসময় কামরুল ইসলাম খলিলুর রহমানকে থেরাপি দিতে গিয়ে তার শরীর ঝলসে দেন। তখন খলিলুর রহমানের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন। তারা দেখেন, খলিলুর রহমানকে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করে রাখেন কামরুল ইসলাম। পরে রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় খলিলুর রহমানকে বাঁশখালী হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার আত্মীয়-স্বজনরা। এসময় রোগীর সাথে কামরুল ইসলামকেও উপজেলা সদরে নিয়ে আসেন তারা। খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন ইউএনও।
এসময় ইউএনও বাঁশখালী হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক, রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন এবং খলিলুর রহমানের শরীরের অবস্থা প্রত্যক্ষ করেন। ইউএনও চিকিৎসার নামে তার শরীরের বড় একটা অংশ ঝলসে দেয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কামরুল ইসলামকে জেরা করেন। এসময় কামরুল ইসলাম জানান, তিনি ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করে আসছিলেন। তিনি ফেসবুক ইউটিউব দেখে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসার কথা এবং নিজের দোষ স্বীকার করেন। এসময় ইউএনও এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত ভুয়া ডাক্তার কামরুল ইসলামকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করার পাশাপাশি ওই রোগীর যাবতীয় চিকিৎসা খরচ বহনের নির্দেশ দেন। গভীর রাতে ইউএনও’র এমন অভিযানকে এলাকাবাসী ও সাধারণ মানুষ স্বাগত জানিয়েছেন। গুরুতর আহত খলিলুর রহমান বর্তমানে বাঁশখালী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ইউএনও মোহাম্মদ জামশেদুল আলম জানান, ডাক্তার পরিচয় দিয়ে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসার দায়ে কামরুল ইসলাম নামে একজনকে ১ লাখ টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। সে ফেসবুক ইউটিউব দেখে চিকিৎসা দেয়ার কথা স্বীকার করেন।