পূর্বদেশ ডেস্ক
সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে দুই বছরের তৎপরতা শেষ পর্যন্ত ফলশূন্যই থাকল; সাতটি কোম্পানি দরপত্রের নথি কিনলেও কেউ এতে অংশ নেয়নি। গতকাল সোমবার দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনের নির্ধারিত সময় দুপুর ১টা পর্যন্ত তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর কোনোটি প্রস্তাব জমা দেয়নি। খবর বিডিনিউজের।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোনো প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়নি। আমরা এখন একটা কমিটি করে দিয়েছি পর্যালোচনার জন্য। কেন তারা দরপত্র জমা দিল না সেই বিষয়টি আমরা বিশ্লেষণ করব। পাশাপাশি পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করব।
বঙ্গোপসাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক ঠিকাদার বাছাই করতে ছয় বছর পর দরপত্র আহবান করেছিল বাংলাদেশ।এর আগে ২০১৯ সালে অফশোর বিডিংয়েও উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বাতিল করা হয়। ওই বছর তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও অংশীদারত্ব নিয়ে চুক্তির খসড়া নীতিমালা (মডেল পিএসসি) তৈরি করেছিল পেট্রোবাংলা। সেটা খুব বেশি আকর্ষণীয় না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত দরপত্র আহবান করা হয়নি।
এরপর নানা বিচার বিশ্লেষণ শেষে ২০২৩ সালে আরেকটি মডেল পিএসসি তৈরি করা হয়। আন্তর্জাতিক জ্বালানি কোম্পানিগুলোর কাছে বঙ্গোপসাগরে খনিজ সম্পদ আহরণের কাজকে আকর্ষণীয় করে তুলতে নতুন পিএসসিকে ঢেলে সাজানো হয়। এটিকে বিনিয়োগ আকর্ষণের উপযোগী করে তোলা হয়।
আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণে বিদেশে বিনিয়োগ বিষয়ক বিভিন্ন রোড শোতে সাগরে গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়টিকে সামনে রাখা হয়। দেশের সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দরপত্র জমা দিতে সময়ও বাড়ানো হয়। দুই বছর ধরে এসব প্রচেষ্টার পরও তা কোনও কাজে এল না।
দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সাতটি কোম্পানি আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা কেউ এগিয়ে আসেনি।
ঠিকাদারদের সাড়া না পাওয়ার বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, কোনো কোম্পানি সেভাবে কিছু জানায়নি, তবে কেউ কেউ ধারণা করছে গ্যাসের দরের বিষয়টি এখানে প্রভাবিত করে থাকতে পারে।
বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা মোট ২৪টি বøকে ভাগ করা। এরমধ্যে গভীর সমুদ্রে ১৫টি এবং অগভীর সমুদ্রে ১১টি বøক আছে। অগভীর সমুদ্রের দুটি ব্লকে অনুসন্ধান পরিচালনা করছে ভারতের কোম্পানি ওএনজিসি।
সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে গত ১১ মার্চ দরপত্র আহবান করা হয়েছিল। দরপত্র জমার জন্য ৬ মাস (৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) সময় দেওয়া হয়। পরে তা তিন মাস বাড়িয়ে ৯ ডিসেম্বর করা হয়। সর্বশেষ ২০১৬ সালে দরপত্র আহবান করা হয়েছিল। এরপর ২০১৯ সালে নতুন পিএসসি তৈরি করা হলেও দরপত্র ডাকা হয়নি।