তিনশ’ কোটি টাকার যন্ত্রপাতির অভাবে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। গতকাল শনিবার সিটি করপোরেশনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতি চট্টগ্রাম শাখার উদ্যোগে ‘নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সিটি মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন কাজে যন্ত্রপাতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্তে¡ও সরকারের সদিচ্ছার অভাবে নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনশ’ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ক্রয়ে বাজেট বরাদ্দ না পাওয়ায় সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামে জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয় না। অথচ চট্টগ্রাম থেকে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সবকিছু নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চট্টগ্রামকে দেওয়ার বেলায় বৈষম্য করা হয়। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ জলাবদ্ধতা নিরসন করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ডা. শাহাদাত হোসেন।জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রতিবন্ধকতাগুলো গণমাধ্যমে তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানিয়ে সিটি মেয়র বলেন, কোনকিছু লুকানোর প্রয়োজন নেই। মেয়রকে খুশি করার জন্য তথ্য গোপন করলে সমস্যার সমাধান করতে পারবো না। তাই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রকৃত সমস্যা তুলে ধরুন। গণমাধ্যমের রিপোর্ট দেখে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবো।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার ব্যুরো প্রধান ভূঁইয়া নজরুল। বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতি চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি অভীক ওসমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের উপাচার্য প্রফেসর এস. এম. নছরুল কদির, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা, জনসংযোগ সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি এ এস এম বজলুল হক, পেশাজীবী নেতা ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, ডা. একেএম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্যসচিব ও সিডিএ বোর্ড মেম্বার জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও বাসস এর ব্যুরো চিফ মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মনজারে খোরশেদ আলম, সিডিএ বোর্ড মেম্বার স্থপতি ফারুক আহমেদ, স্থপতি জেরিনা হোসেন, স্থপতি আশিক ইমরান, সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. শহীদুল হক এবং অধ্যক্ষ সুরাইয়া বেগম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ সাকী।
জনসংযোগ সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি এ. এস. এম. বজলুল হক চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যকর করার লক্ষ্যে প্রচারণা ও তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি, নাগরিক ও গণমাধ্যম প্রতিনিধির সমন্বয়ে সিটি করপোরেশনে একটি সেল বা কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন করতে হলে পাহাড় কাটা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় সরকারি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেখানে বিভিন্ন পার্ক; যেমন বাটারফ্লাই পার্ক ইত্যাদি করা যেতে পারে। বক্তারা আরও বলেন, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক করতে হবে। আবর্জনাকে সম্পদে পরিণত করতে হবে। ক্লাব কালচার সৃষ্টির মাধ্যমে তরুণদের কাজে লাগাতে হবে। অনুষ্ঠানে জনসংযোগ সমিতির পক্ষ থেকে সিটি মেয়রকে ক্রেস্ট দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। খবর বিজ্ঞপ্তির