তালেবান শাসনকে বৈধতা না দেওয়ার আহবান মালালার

1

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই মুসলিম নেতাদের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন, তারা যেন আফগান তালেবান সরকারের শাসনকে বৈধতা না দেন এবং নারীদের শিক্ষা ও অধিকারে বাধা দেওয়ার বিরুদ্ধে সঠিক নেতৃত্ব প্রদর্শন করেন। রবিবার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে মুসলিম দেশগুলোর মেয়েদের শিক্ষাবিষয়ক এক সম্মেলনে তিনি এই আহবান জানান।
মালালা বলেন, তাদের বৈধতা দেবেন না। মুসলিম নেতাদের এখনই সময় নিজেদের কণ্ঠ উচ্চারণ করার, ক্ষমতা প্রয়োগ করার। সঠিক নেতৃত্ব দেখানোর। প্রকৃত ইসলাম প্রদর্শনের। দুই দিনের এই সম্মেলনে মুসলিম বিশ্বের ডজনখানেক দেশের মন্ত্রী ও শিক্ষাখাতের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেছেন। সম্মেলনটি মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
২০২১ সালে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর তালেবান সরকার কঠোর শরিয়া আইন প্রয়োগ করেছে। এই কঠোরতাকে জাতিসংঘ লিঙ্গবৈষম্য হিসেবে অভিহিত করেছে। তাদের এই বিধিনিষেধের ফলে নারীদের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় অংশগ্রহণ বন্ধ হয়েছে, অনেক সরকারি চাকরি থেকেও তারা বঞ্চিত হয়েছে। পাকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকী বলেছেন, তালেবান সরকারকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা উপস্থিত হয়নি।
মালালা বলেন, সরাসরি বলতে গেলে, তালেবান নারীদের মানুষ হিসেবে গণ্য করে না। তারা তাদের অপরাধগুলোকে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় যুক্তিতে আড়াল করার চেষ্টা করে। ২০১২ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে মেয়েদের শিক্ষার পক্ষে প্রচার চালানোর সময় পাকিস্তানি তালেবানের হাতে গুলিবিদ্ধ হন মালালা। পরবর্তীতে, ২০১৪ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন এবং তখন থেকে তিনি বিশ্বব্যাপী নারীদের শিক্ষার অধিকারের জন্য একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে কাজ করছেন।
সম্মেলনে মালালা আরও বলেন, তালেবান স্পষ্টভাবে তাদের লক্ষ্য তুলে ধরেছে—তারা নারীদের সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্র থেকে নির্মূল করতে এবং তাদের অস্তিত্ব মুছে দিতে চায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তালেবান সরকারের বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে একমত হলেও কাবুলের শাসকদের সঙ্গে কীভাবে সম্পৃক্ত হওয়া উচিত তা নিয়ে বিভক্ত। কেউ কেউ বলছেন, তালেবানকে ক‚টনৈতিক মহল থেকে একঘরে করে রাখা উচিত, অন্যদিকে অনেকে আলোচনা ও যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী। এখনও কোনও দেশ তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি।