তাইওয়ানে ‘ইয়োলো ভেস্ট’ আন্দোলন কর সংস্কারের দাবি

34

তাইওয়ানেও ফ্রান্সের মতো আন্দোলন শুরু হয়েছে। আন্দোলনকারীরা ফরাসিদের মতো ‘ইয়োলো ভেস্ট’ পরে মাঠে নেমেছে। তাদের দাবি, কর ব্যবস্থার সংস্কার। তাইয়ানে ‘ভুল করে’ বেশি কর দাবি করা বা আদালতের আদেশের পরও কর কর্মকর্তাদের বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধে এসব আন্দোলনকারীরা একটি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থা চান। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে আন্দোলনকারীরা এ মাসে তাদের তৃতীয় দিনের কর্মসূচি পালন করল।
তাইওয়ানের আন্দোলনকারীরা ‘ইয়োলো ভেস্ট’ পরে ছিলেন। ইয়োলো ভেস্ট আন্দোলন শুরু হয় গত নভেম্বরে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে প্রশমিত করতে জ্বালানির কর বাড়ায় ফরাসি সরকার। কিন্তু এতে চাপ পড়েছিল মূলত নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর। এর প্রতিবাদে আন্দোলন সংগঠিত হয়।
আইন অনুযায়ী, বেশি আলো প্রতিফলিত করে এমন এক ধরনের বিশেষ নিরাপত্তামূলক জ্যাকেট গাড়িতে রাখতে হয় ফরাসি চালকদের। এর রঙ সবুজাভ হলুদ। আন্দোলনকারীরা এই জ্যাকেট (ভেস্ট) পরে বিক্ষোভ শুরু করলে তাদের নাম হয়ে যায় ‘ইয়োলো ভেস্ট’ আন্দোলনকারী।
বৃহস্পতিবার তাইওয়ানেড় রাজধানী তাইপেতে ‘ইয়োলো ভেস্ট’ আন্দোলনকারীরা স্লোগানে মুখরিত করে তোলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রাঙ্গণ। তাদের হাতে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল, তাইওয়ানের কর ব্যবস্থা অবৈধ। আন্দোলনকারীদের একজন জোয়ানা তাই (২৩)। তার ভাষ্য, ‘এটা মাদের ভবিষ্যতের সঙ্গে জড়িত। আমরা হংকং ও চীনের মূল ভূখন্ডে কার্যকর থাকা ব্যাবস্থার সঙ্গে তুলনা করে দেখেছি। আমাদের প্রশ্ন, কেন তাদের তাইওয়ানের পার্থক্য এতো বেশি। অনেকেই আছে, যারা নিজেরা নিজেদের ব্যবসা শুরু করতে চায়। কিন্তু তাইওয়ানের কর ব্যবস্থার কারণে ছোট ব্যবসায়ীরা কাজ করতে পারছে না।’
আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে কর ও আইন ব্যবস্থার সংস্কারে ২০১৬ সালে গঠিত গোষ্ঠী ‘রিফর্ম লিগ’। সাপ্তাহখানেক আগে পালন করা কর্মসূচিতে তারা তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট ভবনের সামনে ২০ হাজার মানুষকে জড়ো করেছিল। গত শনিবার তাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ। আয়োজকদের একজন ওয়াং চি লানের ভাষ্য, ‘ফ্রান্সে সম্প্রতি হওয়া আন্দোলন আমাদের প্রেরণা দিয়েছে।
তাদের আন্দোলনে যেমন সে দেশের সরকার নমনীয় হয়েছে, তেমনি আমাদের আন্দোলনের প্রক্সিতে আমাদের প্রেসিডেন্টও আমাদের কথা শুনবেন বলে আমরা আশা করি।’ তাইওয়ানের ‘ইয়োলো ভেস্ট’ আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের হয় ভুল করে বেশি কর দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়, আর না হয় অনেক বেশি কর চাওয়া হয়। এমন বিষয়ে আপিল করার খরচ অনেক বেশি।
তারপরও যদি কেউ আদালতে যায় এবং আদালতের রায় তার পক্ষে আসে, তাতেও কাজ হয় না।
কর কর্মকর্তারা আদালতের আদেশের পরও করের জন্য তাদের হয়রানি করে। আন্দোলনকারীরা কর ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি করেছেন। রিফর্ম লিগের একজন জে ল্যাং। আইনের এই অধ্যাপক বলেছেন, ‘পুরো ব্যবস্থাকে আইন অনুযায়ী চলতে হবে। মানুষ একটি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থা চায়। তাদেরকে যেন আতঙ্কে থাকতে না হয় এই ভেবে যে তাদের অর্থ কেড়ে নেওয়া হবে।’ আন্দোলনের আরেক আয়োজক জেনি লি বলেছেন, ‘আপিলের খরচ অনেক বড় মানসিকে চাপের বিষয়।’