নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত দুইদিনব্যাপী ‘তারুণ্যের সেমিনার ও সমাবেশ’। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে ‘কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার এবং আগামীকাল শনিবার নগরের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে অনুষ্ঠিত হবে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’।
গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দুইদিনের কর্মসূচির নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক শ্যামল মালুম, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহব্বায়ক বেলায়েত হোসেন বুলু ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জমির উদ্দিন নাহিদ, মহানগর ছাত্রদলের আহব্বায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন।
লিখিত বক্তব্যে আবদুল মোনায়েম মুন্না বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় এবং যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলগুলোর ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে তরুণ সমাজকে নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার উদ্দেশ্যে মাসব্যাপী এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সমাবেশ হবে তারুণ্যের এক মহামিলন। এখানে সমবেত হবেন দেশের নানা শ্রেণি-পেশা, বিশ্বাস, মতাদর্শ ও সামাজিক পটভূমি থেকে উঠে আসা তরুণ-তরুণীরা, যারা স্বপ্ন দেখেন একটি আধুনিক, ন্যায্য ও মানবিক বাংলাদেশের। তাদের সঙ্গে থাকবেন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মী ও সমর্থকবৃন্দ, যারা গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই ঐতিহাসিক সমাবেশে তারা শুধু উপস্থিত থাকবেন না, বরং নিজেদের হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসা আশা-আকাঙ্খা, অভিজ্ঞতা ও স্বপ্নগুলোকে প্রকাশ করবেন। একই সঙ্গে মনোযোগ দিয়ে শুনবেন বিএনপির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা, নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনা যা তাদের সেই স্বপ্নপূরণের সেতুবন্ধন হয়ে উঠতে পারে।
আবদুল মোনায়েম মুন্না বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে তরুণদের মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াস চলছে। কর্মমুখী ও দক্ষতানির্ভর বাংলাদেশ গড়ার জন্য তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি। তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিশ্বাস করেন, তরুণরাই দলের চালিকাশক্তি। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে তরুণদের সম্পৃক্ততার বিকল্প নেই। তাই তিনি তরুণদের নিয়ে এই আয়োজনের অভিনব পরিকল্পনা করেছেন। বিএনপি তারুণ্যনির্ভর দল হিসেবে সবসময় তরুণদের মূল্যায়ন করেছে। এই আয়োজন তারই বহিঃপ্রকাশ।
তিনি জানান, আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম শহরের চট্টেশ্বরী রোডস্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিতব্য সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আলোচক হিসেবে অংশ নেবেন দেশি-বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রযুক্তিবিদ, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, উদ্যোক্তা ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ। বক্তাদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আবদুল্লাহ-আল-মামুন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটির ড. জামাল উদ্দিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. নাহরিন খান, বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান, নির্মাতা মাবরুর রশিদ বান্নাহ, ওরাকলের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মুনতাসির মুনীর, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট সাইয়েদ আবদুল্লাহ, যুক্তরাষ্ট্রের স্যানট্যান্ডার ব্যাংকের সিনিয়র ডিরেক্টর শাফকাত রাব্বী এবং পাঠাও-এর সিইও ফাহিম আহমেদ।
শনিবার অনুষ্ঠিতব্য ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে’ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আয়োজকরা জানান, এই সমাবেশ হবে তরুণদের এক মহামিলন, যেখানে নানা শ্রেণি-পেশা, বিশ্বাস, মতাদর্শ ও সামাজিক পটভ‚মি থেকে উঠে আসা তরুণ-তরুণীরা অংশগ্রহণ করবেন। তরুণদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সমাবেশ হবে প্রাণবন্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক। তারা তাদের স্বপ্ন, মতামত ও চিন্তা তুলে ধরবেন এবং বিএনপির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনার সঙ্গে পরিচিত হবেন।
এই কর্মসূচি শুধুমাত্র চট্টগ্রামে সীমাবদ্ধ নয়। আগামীতে খুলনা, বগুড়া ও ঢাকায়ও একই ধরনের সেমিনার ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে শিক্ষার্থী, চিন্তাবিদ, তরুণ উদ্যোক্তা, পেশাজীবী ও নানা শ্রেণির প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। আলোচনা হবে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, প্রযুক্তি, পরিবেশ ও রাজনৈতিক অধিকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে। মূল লক্ষ্য—তরুণ সমাজের মতামত ও চিন্তাকে দলীয় নীতি ও কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথ রচনা করা।