ডলুখালে ভাঙন, আধুনগরে ঝুঁকিতে ৫ শতাধিক ঘর

3

লোহাগাড়া প্রতিনিধি

চলতি বর্ষা মৌসুমে বিগত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর দিয়ে প্রবাহিত ডলু খালের পাড় ভেঙে পার্শ্ববর্তী লোকালয়ে প্রবেশ করেছে পানি। আর পানির তীব্র স্রোতে ভেঙে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্চিন্ন হয়ে পড়েছে আধুনগরের সর্দারনী পাড়া-গারাঙ্গিয়া রশিদিয়া নামক গ্রামীণ সড়কটি। এতে চরম ঝুঁকিতে পড়েছেন পার্শ¦বর্তী এলাকার অন্তত পাঁচ শতাধিক কাঁচা ও অর্ধ পাকা বসতবাড়ি।
গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
পরিদর্শনকালে দেখা যায়, উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সর্দারনীপাড়ার পূর্বদিকে প্রবাহিত ডলু খালের পাড় ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এতে সিপাহীপাড়া, সিকদারপাড়া, বড়ুয়াপাড়া এবং সর্দারনী পাড়ায় প্লাবনের আশঙ্কা দেখা গেছে।
আধুনগর সিপাহী পাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা কুতুব উদ্দিন জানান, আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি ডলু খালটি অনেক গভীরতম একটি খাল। খালে স্থায়ী কোনো প্রতিরক্ষা বাঁধ না থাকায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আধুনগরে ডলু খালের কোনো না কোনো অংশ ভেঙে গিয়ে বন্যার পানিতে অনেক বসত-বাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। ডলু খালে বাঁধ নির্মাণে দীর্ঘ বিলম্বের কারণে খালের পাড় ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে লোকালয়ে এভাবে পানি ঢুকে পড়লে আমাদের বসত-বাড়িতে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম আসলেই আমাদের আতঙ্কের মধ্যে দিন-যাপন করতে হয়। ব্যাপক ক্ষতির শিকার হই। ফলে অর্থনৈতিকভাবে আমরা সোজা হতে পারি না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ডলু খালের পানির প্রবাহ দিন দিন যেভাবে বাড়ছে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অবিলম্বে ডলু খালের ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন খাল পাড়ের বাসিন্দারা।
আধুনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের পানির তীব্র স্রোতে ডলু খালের পাড় ভেঙে গেছে। খালের পার্শ্ববর্তী লোকালয়ে পানি ঢুকে গেছে। আমি ইতোমধ্যে ভাঙণস্থল পরিদর্শন করে বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেছি।
যদি চলমান বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল আরো বেশ কিছুদিন অব্যাহত থাকে তাহলে অন্তত পাঁচ শতাধিক কাঁচা, অর্ধ-পাকা ও পাকা বসতবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন নাজিম উদ্দীন।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ ইনামুল হাছান বলেন, ডলু খালের ভাঙনের বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দেখে আসতে বলেছি। বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।