নিজস্ব প্রতিবেদক
সারাদেশের ন্যায় দৈর্ঘ্য, উৎস ও পতিতমুখসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৫১ নদ-নদী ঠিকানা পেয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটির বিভিন্ন উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া এসব নদীর মোট দৈর্ঘ্য দুই হাজার ৬২৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার। এ অঞ্চলের সবচেয়ে দীর্ঘতম নদী সাঙ্গু। যার দৈর্ঘ্য ২৯৪ কিলোমিটার। সবচেয়ে ছোট নদী বাঁশখালীর উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া টৈটং ও হাটহাজারীর মাদারি নদী। গত ১৪ এপ্রিল পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত সারাদেশের নদ-নদীর তালিকায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও নদী কর্মীদের সহায়তায় এ নদীর তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রকাশিত তালিকায় সারাদেশে এক হাজার ৪১৫টি নদ-নদীর তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তালিকায় নদীগুলোর নাম, কোন বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় অবস্থান ছাড়াও নদীর উৎসমুখ, পতন মুখ, দৈর্ঘ্য ও স্থানীয় নামও উল্লেখ করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন পূর্বদেশকে বলেন, ‘আমরা একটি নির্ভুল নদ-নদীর তালিকা প্রস্তুতের চেষ্টা করেছি। কয়েক দফা তালিকা প্রকাশ, সংশোধন, সংযোজন করে নতুন তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এখন আমরা এ নদ-নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তালিকায় বৃহত্তর চট্টগ্রামের পাঁচ জেলার ৫১টি নদ-নদী তথ্য রয়েছে। এগুলো হলো- চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার সাঙ্গু নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে আনোয়ারা নদী। এ নদীর দৈর্ঘ্য ১০.৫ কিলোমিটার। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ইছামতি নদী রাঙ্গামাটির কাউখালী পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে এটি রাঙ্গুনিয়ায় কর্ণফুলী নদীতে পতিত হয়েছে। এ নদীর দৈর্ঘ্য ৪৩ কিলোমিটার। বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার লামা, নাইক্ষংছড়ি, চকরিয়া, রামু, কক্সবাজার সদর, মহেশখালী উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ঈদগাঁও নদী। এ নদী বান্দরবানের লামা উপজেলার পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে মহেশখালী চ্যানেলে পতিত হয়েছে।
বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার লামা ও চকরিয়া উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ইয়াংছর নদী। পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হওয়া এ নদী মাতামুহুরী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া নদীর দৈর্ঘ্য ৬.৫ কিলোমিটার। এ নদী মাতামুহুরী নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে কুতুবদিয়া চ্যানেলে পতিত হয়েছে। চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটি জেলার রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, কর্ণফুলী, আনোয়ারা উপজেলা এবং চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও, বাকলিয়া, পতেঙ্গা থানা এলাকায় প্রবাহিত হয়েছে ১৬১ কিলোমিটার দীর্ঘ কর্ণফুলী নদী। ভারতের মিজোরামের শৈত্যগ্রাম লুসাই পাহাড়, রাঙ্গামাটির বরকল থেকে নেমে আসা এ নদী আনোয়ারা হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। স্থানীয় ভাষায় এ নদীকে বড় গাঙ বলা হয়।
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ কুহেলিয়া নদী। এ নদী মহেশখালী চ্যানেল থেকে উৎপত্তি হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটি জেলার রাউজান ও কাউখালী উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ খাগটিয়া নদী। এ নদী পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে হালদা নদীতে পতিত হয়েছে। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১৯.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ চকরিয়া নদী। পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে মাতামুহুরী নদীতে পতিত হওয়া এ নদীকে স্থানীয়রা হারবাং ছড়া নামেই চিনে। রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির নানিয়াচর উপজেলায় প্রবাহিত হওয়া চেঙ্গী নদীর দৈর্ঘ্য ৯৭ কিলোমিটার। পানছড়ির পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হওয়া এ নদী কাপ্তাই হ্রদে পতিত হয়েছে। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার ছোট পিলাক নদীর দৈর্ঘ্য ৩৬ কিলোমিটার। পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে রামগড় অংশে ফেনী নদীতে পতিত হওয়া এ নদীকে স্থানীয়রা ছোট বিলাই নদী নামে চিনে। চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ নদী জলকদর। সাঙ্গু নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে কুতুবদিয়া চ্যানেলে বঙ্গোপসাগরে পতিত হওয়া এ নদীটি জলকদর খাল নামেই অধিক পরিচিত।
কক্সবাজারের ঈদগাঁও ও রামু উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ জোয়ারিয়া নালা। এ নদী পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে ভারুয়াখালীতে পতিত হয়েছে। বান্দরবান ও চট্টগ্রামের বান্দরবান সদর, লোহাগাড়া, লামা, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ টংকাবতী নদী। এ নদী নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে ডলু নদীতে পতিত হয়েছে। চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ টৈটং নদী। এ নদী পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া চ্যানেলে পতিত হয়েছে। রাঙ্গামাটির বরকল, বিলাইছড়ি ও জুরাছড়ি উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ১৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঠেগা নদী। দুমদুমিয়া, জুরাছড়ির পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হওয়া এ নদী রাঙ্গামাটির বরকলে কর্ণফুলী নদীতে পতিত হয়েছে।
বান্দরবান ও চট্টগ্রামের বান্দরবান সদর, লোহাগাড়া, লামা, সাতকানিয়া, চন্দনাইশে প্রবাহিত হয়েছে ৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ ডলু নদী। বান্দরবান সদরের পাহাড়ী এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে এ নদী চন্দনাইশে সাঙ্গু নদীতে পতিত হয়েছে। চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটির হাটহাজারী, রাউজান ও কাউখালী উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ ডাবুয়া নদী। এ নদী পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে হালদা নদীতে পতিত হয়েছে। খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের লক্ষীছড়ি, গুইমারা ও ফটিকছড়ি উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ধুরং নদী। এ নদী গুইমারার পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে ফটিকছড়ির হালদা নদীতে পতিত হয়েছে। কক্সবাজার ও বান্দরবানের টেকনাফ উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নাফ নদী। এ সীমান্ত নদীটি মায়ানমার ও উখিয়া এলাকায় উৎপত্তি হয়ে বঙ্গোপসাগরের টেকনাফ অংশে পতিত হয়েছে। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে নোযাচি নদী। ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী মহেশখালীর বদ্দর নদীথেকে উৎপত্তি হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।
চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, ফেনী ও নোয়াখালী জেলার ফটিকছড়ি, মিরসরাই, মাটিরাঙ্গা, রামগড়, কোম্পানিগঞ্জ, ছাগলনাইয়া, ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ১৫২ কিলোমিটার দীর্ঘ ফেনী নদী। ভারত ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা থেকে উৎপত্তি হওয়া এ নদী ফেনীর সোনাগাজীতে বঙ্গোপসাগরের স›দ্বীপ চ্যানেলে মিলিত হয়েছে। খাগড়াছড়ির গুইমারা, মাটিরাঙ্গা, রামগড় উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ বড় পিলাক নদী। স্থানীয়দের কাছে বড় পিলাই নামে পরিচিত এ নদী গুইমারার পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে রামগড়ে ফেনী নদীতে পতিত হয়েছে।
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ নদী বদ্দর। এ নদী পাহাড়ী এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে বঙ্গোপসাগরের মহেশখালী চ্যানেলে পতিত হয়েছে। কক্সবাজার ও বান্দরবানের ৮১ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁকখালী নদী কক্সবাজার সদর উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে। এ নদী রামু নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ী এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে বঙ্গোপসাগরের মহেশখালী চ্যানেলে পতিত হয়েছে।
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে বুড়া মাতামুহুরী। ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী চকরিয়ার মাতামুহুরী নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে বঙ্গোপসাগরের মহেশখালী চ্যানেলে পতিত হয়েছে। চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ বোয়ালিয়া নদী। পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হওয়া এ নদী হালদা নদীতে মিলিত হয়েছে। রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি ও বরকল উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ বড় হরিনা নদী। এ নদী পাহাড়ী এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে কর্ণফুলী নদীতে পতিত হয়েছে। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে ভান্ডালজুরী নদী। ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে কর্ণফুলীতে পতিত হয়েছে। কক্সবাজার সদরের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ভারুয়াখালী নদী। রামুর পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী বঙ্গোপসাগরের মহেশখালী চ্যানেলে পতিত হয়েছে।
কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে মনখালী নদী। ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী পাহাড়ি এলাকা থেকে মিলিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপর প্রবাহিত হয়েছে মন্দাকিনী নদী। ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে হালদা নদীতে পতিত হয়েছে। কক্সবাজার ও মহেশখালীর উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে মহেশখালী নদী। মাতামুহুরী নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে ৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির লংগদু উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে মাইনী নদী। দীঘিনালার পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হওয়া ১০৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী কাপ্তাই হ্রদে পতিত হয়েছে।
কক্সবাজার ও বান্দরবানের চকরিয়া উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে মাতামুহুরী নদী। বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের আলীকদমের পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হওয়া ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী বঙ্গোপসাগরের পেকুয়া মহেশখালী চ্যানেলে পতিত হয়েছে। চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পাহাড়ের নি¤œাঞ্চল থেকে উৎপত্তি হয়ে হালদা নদীতে পতিত হয়েছে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ মাদারী নদী। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে মাহালিয়া নদী। পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হওয়া ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী ডলু নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি ও কাপ্তাই এলাকা প্রবাহিত হয়েছে রাইক্ষ্যং নদী। বাঘাইছড়ির বড়থলির পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হওয়া ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদীর সাথে মিশেছে। বান্দরবান ও কক্সবাজারের নাইক্ষ্যংছড়ি, রামু, কক্সবাজার সদর উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে রেজু নদী। ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে উৎপত্তি হয়ে উখিয়ার বঙ্গোপসাগর অংশে পতিত হয়েছে। বান্দরবান সদর ও রোয়াংছড়ির পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে সাঙ্গু নদীতে পতিত হয়েছে ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ রোয়ানছড়ি নদী।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ও রাউজান উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে লেলাং নদী। পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে ৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী হালদা নদীতে পতিত হয়েছে। রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি ও বরকল উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে শলক নদী। জুরাছড়ির পাহাড়ি এলাকায় উৎপত্তি হওয়া ৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী বরকল উপজেলার কর্ণফুলী নদীতে মিলিত হয়েছে। চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে শিকলবাহা চন্দ্রখালী নদী। স্থানীয়দের কাছে চান্দখালী নামে পরিচিত এ নদী সাঙ্গু নদী থেকে উৎপত্তি হওয়া ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী কর্ণফুলী নদীতে মিলেছে। চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে শিকলবাহা মুরালী নদী। ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী আনোয়ারার সাঙ্গু নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে কর্ণফুলীতে মিলেছে। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে শিলক নদী। বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হওয়া ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী রাঙ্গুনীয়া অংশে কর্ণফুলী নদীতে পতিত হয়েছে।চট্টগ্রামের পটিয়ায় পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে শিকলবাহা চান্দখালী নদীতে মিলিত হয়েছে ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ শ্রীমাই নদী।
খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও চট্টগ্রামের লক্ষীছড়ি, রাউজান, ফটিকছড়ি, কাউখালী উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সরতা নদী। লক্ষীছড়ির পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হওয়া ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী হালদা নদীতে পতিত হয়েছে। চট্টগ্রাম ও বান্দরবানেরর সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, আনোয়ারা, বাঁশখালী, থানচি, বান্দরবান সদর, রুমা, রোয়াংছড়ি উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে সাঙ্গু নদী। শঙ্খ নদী হিসেবে পরিচিত এ নদী থানচির মিয়ানমার সীমান্ত থেকে উৎপত্তি হয়ে বঙ্গোপসাগরের বাঁশখালী অংশে পতিত হয়েছে। যার দৈর্ঘ্য ২৯৪ কিলোমিটার। ফেনী ও চট্টগ্রামের মিরসরাই, ছাগলনাইয়া, পরশুরাম, ফুলগাজী, ফেনী সদও, সোনাগাজী উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে সিলোনিয়া নদী। কালিদাস পাহালিয়া নামেও পরিচিত ৬১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে উৎপত্তি হয়ে ফেনী নদীতে পতিত হয়েছে। বান্দরবান ও কক্সবাজারের লামা, চকরিয়া উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে হারগেজা নদী। পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী বঙ্গোপসাগরের মহেশখালী চ্যানেলে পতিত হয়েছে। চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ির ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান ও নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় প্রবাহিত হয়েছে হালদা নদী। রামগড়ের পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি হওয়া ১১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী রাউজান ও চান্দগাঁও এলাকায় কর্ণফুলী নদীতে পতিত হয়েছে।