বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বাংলাদেশটা আমাদের, এর ভবিষ্যতও এ দেশের মানুষকেই ঠিক করতে হবে।’ তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্মাণ আমেরিকা থেকে ট্রাম্প এসে ঠিক করে দেবেন না। এমনকি চীন থেকে শি এসেও এটা করে দেবেন না কিংবা ভারত থেকে মোদিও ধাক্কা দিয়ে কিছু করতে পারবেন না। যা করার আমাদের করতে হবে। এ বিষয় আমাদের অন্তরে গেঁথে নিতে হবে।’
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সেমিনার হলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ক্ষমতায়ন: নেতৃত্ব, ঐক্য এবং প্রবৃদ্ধির পথ’ শীর্ষক এক আলোচনায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।
প্রায় শত বছর ধরে আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ লড়াইয়ে আমাদের অনেক ত্যাগ আছে, অনেকে প্রাণ দিয়েছেন। কয়েকদিন আগে ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে আমাদের কয়েক হাজার তরুণ-তাজা প্রাণ চলে গেছে। তাদের প্রতি অন্তর থেকে শ্রদ্ধা জানাই। তাদের ত্যাগের কারণেই বাংলাদেশ নতুন করে সত্যিকার অর্থে একটি সুন্দর, শান্তিপূর্ণ, সুখী দেশের স্বপ্ন দেখছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন, তার সবটা তরুণদের জন্য হয়েছে। সেই বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে একেবারে ২৪ এর জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সামনে থেকে ভ্যানগার্ডের ভূমিকা পালন করেছেন আমাদের ছেলেমেয়েরা এবং সেখানেই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, সবাই বলছেন, এত যে রক্তপাত হলো, এত রক্ত ঝরল, এত মায়ের বুক খালি হলো-কী হবে এর শেষ পরিণতি? আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, পরিণতি খুব ভালো হবে। কারণ, আমরা বাংলাদেশের মানুষ চিরকাল ভালোর জন্য লড়াই করেছি এবং জয়ী হয়েছি। তাই নতুন বাংলাদেশ গড়তে আমাদের সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে।
দেশের প্রান্তিক মানুষের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘তাদের কথা কেউ বলেন না। আমাদের কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষ, বৈষম্য তো তাদের কাছে, পুরো বৈষম্য তো সেখানে। তাদের কথা বলা দরকার, তারা হেসেখেলে কাজ করে বাংলাদেশকে টেনে তুলে ধরছেন। অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করে তুলছেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ নিয়ে মির্জা ফখরুল শঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘যদি এর সুরাহা করা না যায়, তবে আরও বড় বিপদে পড়তে হবে। আমার মনে হয়, কৃষক ও কৃষির সঙ্গে জড়িতদের যদি আমরা এগিয়ে আনতে পারি, তাদের কাজ দিতে পারি, তাদের নতুন প্রযুক্তি দিতে পারি, তবে সমস্যাগুলো আমরা অতিদ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারব।’
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই এক হয়ে কাজ করি, সমস্যা আছে, সমস্যার সমাধানও হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধে যেমন আমরা বহুত্ববাদ এক হয়ে যুদ্ধ করেছি। তেমনি করে ২৪ সালে ছাত্রদের ওপর যখন গুলি চালায়, তখন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। যেভাবে গণঅভ্যুত্থানে সবাই এক হয়েছিল সেভাবে আগামী দিনেও ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকলকে দেশের জন্য কাজ করতে হবে।