টিসিবি’র ট্রাকে দীর্ঘ সারি পণ্য পেয়ে স্বস্তির হাসি

3

মনিরুল ইসলাম মুন্না

পবিত্র রমজানে মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে পণ্য বিক্রি করেছে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। পণ্য কেনার জন্য একজনের উপর আরেকজন ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। তবে বাজারমূল্যের চেয়ে অর্ধেক দামে পণ্য পেয়ে খুশি ক্রেতারা। গতকাল মঙ্গলবার জেল রোডে টিসিবির ট্রাক সেল পয়েন্ট ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়।
টিসিবির চট্টগ্রাম অফিস প্রধান (যুগ্ম পরিচালক) মো. শফিকুল ইসলাম পূর্বদেশকে বলেন, নগরীর ২০টি পয়েন্টে ৪ হাজার পরিবারের জন্য রমজানের প্যাকেজ বিক্রি করা হচ্ছে। তবে আমরা প্যাকেজে খেজুর বাদ দিয়েছি এবং ছোলা দুই কেজির স্থলে এক কেজিতে নিয়ে এসেছি। রমজান শেষের দিকে, তাই প্রধান কার্যালয় থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ট্রাক সেল পয়েন্টে আরও পণ্য বাড়ানো যায় কি না, সে বিষয়ে প্রধান কার্যালয়ে আলাপ করবো।’
জানা গেছে, ‘চট্টগ্রামসহ সারাদেশে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে। মসুর ডাল, চিনি, সয়াবিন তেল ও ছোলা- এই চারটি পণ্য কিনতে পারছেন মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ। পুরো প্যাকেজটি কিনতে একজন ভোক্তাকে গুণতে হচ্ছে ৪৫০ টাকা। টিসিবির ট্রাকে ৬০ টাকা দরে ২ কেজি মসুর ডাল, ৭০ টাকা দরে ১ কেজি চিনি, প্রতি লিটার ১০০ টাকা দরে ২ লিটার সয়াবিন তেল, ৬০ টাকা কেজি দরে ১ কেজি ছোলা পাওয়া যাচ্ছে। বিপরীতে সাধারণ মুদি দোকানে মসুর ডাল কেজি ১২০ টাকা করে ২ কেজি ২৪০ টাকা, চিনি ১ কেজি ১২০ টাকা, ছোলা ১ কেজি ১২০ টাকা এবং সয়াবিন তেল দুই লিটার ৪০০ টাকায় (কোথাও কোথাও দুই লিটার ৩৮০-৩৯০ টাকা) বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে এসব পণ্য একসাথে কিনতে গেলে একজন ভোক্তার প্রয়োজন হবে ৮৮০ টাকা। কিন্তু টিসিবির প্যাকেজে ৪৫০ টাকা দিয়ে সব পণ্য পাচ্ছেন। এতে ভোক্তাদের একটু কষ্ট হলেও ৪৩০ টাকা সাশ্রয় হচ্ছে।
সরেজমিন দুপুর একটার দিকে জেল রোড এলাকায় টিসিবির ট্রাক পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে, পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে তিন শতাধিক মানুষ লাইনে অপেক্ষায় রয়েছেন। টিসিবি’র কার্যালয় থেকে পণ্য আসার পর সেগুলো প্যাকিং করতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় প্রয়োজন হয়। তাই দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর দেড়টার দিকে পণ্য বিক্রি শুরু করেন ডিলার মেসার্স জহির শাহ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শামসুন্নাহার। এতে আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড বিএনপি’র সাবেক সভাপতি সৈয়দ আবুল বশর পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন।
তিনি পূর্বদেশকে বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে কয়েক হাজার গরীব-দুঃখী রয়েছে। এছাড়া আশেপাশের ওয়ার্ড থেকেও এখানে পণ্য কিনতে আসছেন। আমরাও কাউকে না করতে পারি না। চেষ্টা করি সবাইকে টিসিবির পণ্য হাতে তুলে দিতে। কিন্তু পণ্যের পরিমাণ বাড়ানো গেলে, আরও গরীব-দুঃখীর মুখে হাসি ফুটবে।’
এদিকে পণ্য কিনতে আসা বিলকিস আক্তার নামে এক মহিলা বলেন, ‘ট্রাকে পণ্য এসেছে কম। তাড়াহুড়ো না করলে দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। পরে আর আমি পণ্য পাব না। এমন পরিস্থিতির শিকার ইতোপূর্বে কয়েকবার হয়েছি। তাই অত নিয়ম-কানুন মানতে পারছি না।
আরেক ক্রেতা মো. মাহমুদুল ইসলাম বলেন, এখান থেকে পণ্য কিনলে অনেক টাকা সাশ্রয় হয়। তাই কষ্ট হলেও রমজানের সময়ে লাইনে দাঁড়িয়েছি। রমজানে খরচ প্রচুর। অন্তত সরকার আমাদের দুঃখের কথা চিন্তা করে ট্রাক সেল পয়েন্ট বাড়িয়ে দিক। এটাই আমাদের চাওয়া।