নিজস্ব প্রতিবেদক
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তারের পদত্যাগ দাবি করে টানা ৫ম দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।
ডা. সাহেনাকে গণহত্যাকারীদের দোসর, রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী এবং স্বৈরাচার আখ্যা দিয়ে গতকাল রবিবারও অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। এ সময় দাবি আদায় না হলে ক্লাস বর্জন ও লাগাতার কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
আব্দুল্লাহ আল মামুন নামের আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে পুরো জাতি যখন রাজপথে, তখন উনি খুনিদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য চমেকে শান্তি সমাবেশ করেন। এছাড়া ১৬ তারিখে চট্টগ্রাম মেডিকেলে হওয়া আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের তালিকা করে তাদেরকে শাস্তিপ্রদানের হুমকি এবং বিসিএস না হতে দেওয়ার হুমকি দেন। পাশাপাশি ক্যাম্পাসকে পুলিশের হাতে ন্যস্ত করেন।
আরেক শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান জায়েদ বলেন, এক দফা-এক দাবি, চমেক অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন আজ পঞ্চম দিনের মত চলমান রয়েছে। পঞ্চম দিনের মত আজও সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আমাদের এ আন্দোলনে বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণ সমর্থন দিয়েছেন ও একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। কিন্ত এরপরও অধ্যক্ষ পদত্যাগ এড়াতে তিনদিনের ছুটি নিয়েছেন এবং এখনও দাপ্তরিক কাজে অনুপস্থিত আছেন। তবে আমাদের এক দফা দাবি আদায় হচ্ছে না, ততক্ষণ আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
জানা যায়, ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ডা. সাহেনা আক্তার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ সাহেনা কাগজে-কলমে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করলেও হোস্টেল কেন্দ্রিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছেন। হোস্টেলের তত্ত¡াবধায়ক পদে দলীয় কট্টরপন্থী শিক্ষকদের নিয়োগ দিয়েছেন, যারা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এমনও প্রমাণ আছে, তত্ত্বাবধায়ক নিজে তার কাছে অভিযোগ নিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, গত ১৬ জুলাই চমেক ক্যাম্পাসে যারা কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল, তাদের অভিভাবকদের কল ও শোকজ করেছেন অধ্যক্ষ সাহেনা। মিছিলে যাওয়া ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের তালিকা করে তাদের ডেকে নিয়ে হয়রানি করেছেন। ক্লাস বর্জন করায় শিক্ষার্থীদের বিসিএস কীভাবে পাশ হয় দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নাম পুলিশের নিকট জমা দেওয়ার হুমকি দেন এবং উপস্থিত শিক্ষার্থীদের ছবি তুলে নিয়ে যান।