মো. এমরান হোসেন, ফটিকছড়ি
বিগত বর্ষায় দেবে যাওয়া তিন ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন ফটিকছড়ি উপজেলার সুয়াবিল ইউপির শোভনছড়িবাসী। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকাবাসী। চুঁরখারহাট-বাংলাবাজার-শোভনছড়ি সড়কের দেড় কিলোমিটারের মধ্যে পড়েছে এসব ব্রিজগুলো। বর্তমানে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ আকার ধারণ করা ভাঙ্গাপুল ব্রিজ, মালুয়া ঘাটা ব্রিজ, চিনিমনা কালর্ভাটটি আগামী বর্ষার পূর্বে যদি সংস্কার কিংবা পুনর্নির্মাণ করা না হয় তাহলে পাহাড়ি ঢলে ব্রিজগুলো ধসে যাবে বলে আশাঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তখন একমাত্র যোগাযোগের পথটি একবারেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সুয়াবিল ইউনিয়নের ৬ নং ওর্য়াডের চুঁরখারহাট-বাংলাবাজার -শোভনছড়ি সড়কে ফনি খালের উপর ভাঙ্গাপুল ব্রিজ, মালুয়াঘাটা ব্রিজ এবং দুল্লাছড়ি খালের উপর চিনিমনা কালর্ভাটটি গত বর্ষায় পাহাড়ি ঢলে বন্যায় এক পাশে দেবে গিয়ে ধসে হেলে পড়েছে। ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ওইসব ব্রিজের উপর দিয়ে পারাপার হচ্ছেন স্কুল, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাসহ শত শত জিপ, সিএনজি, রিক্সাসহ যানবাহান।
শোভনছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় নবম শ্রেণীর ছাত্র হুমায়ুন উদ্দিন বাবলু ও অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র আশরাফুল ইসলাম বলেন, ব্রিজ তিনটি হেলে পড়েছে গত বর্ষায় । ঝুঁকি নিয়ে আমাদেরকে বিদ্যালয়ে আসাযাওয়া করতে হয়।
৭০ বছর বয়সি কৃষক শাহ আলম জানান, শোভনছড়ি কৃষি নির্ভর এলাকা। ব্রিজগুলো একেবারে ধসে গেলে যাতায়াত বন্ধ হয়ে নাজিরহাট তথা চট্টগ্রাম শহরে কৃষি পণ্য নিয়ে যেতে বড় ধরনের সমস্যা হবে।
সিএনজি চালক মো. জসিম ও সিএনজি চালক মো. সেলিম জানান, প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ এ তিনটি ব্রিজ উপর দিয়ে যাত্রী নিয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়।
মালবাহী জিপের চালক মো. ঈসমাইল বলেন, মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। বিকল্প আর কোন সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে ওই সড়ক দিয়ে ড্রাইভ করতে হয়।
শোভনছড়ির বাসিন্দা সিএনজির যাত্রী জুহুর মিয়া ও সালেহা খাতুন বলেন, শোভনছড়ি থেকে দায়েরাবাড়ি যাচ্ছি। গত বর্ষায় ধসে গেছে ব্রিজগুলো। ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
স্থানীয় বেলাল উদ্দিন বলেন, কৃষিনির্ভর এ এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষের ভরসা এ সড়ক। এটি ছাড়া বিকল্প আর কোন সড়ক নাই।
তাছাড়া বারমাসিয়া চা বাগান, রাবার বাগানে যেতে হয় এ সড়ক দিয়ে। বিগত সময়ে বন্যায় উক্ত সড়কের ব্রিজগুলোর এক পাশে ধসে গেছে। এ নিয়ে পুনঃসংস্কারের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও এলজিআরডি বরাবর আবেদন করেছি। আগামী বর্ষার আগে যদি এ ব্রিজগুলো পুনঃসংস্কার না হয় তাহলে পাহাড়ি ঢলে বন্যায় পুরাটা ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
ফটিকছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন, ব্রিজ, কালভার্ট ও সড়ক, দুটি প্রকল্পে ডিপিপি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন হলে পরবর্তী কাজ হবে।