জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিনিময়

0

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের জুলাই বিপ্লব স্মৃতি হলে ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘জুলাইয়ের সামাজিক চুক্তি: জুলাই সনদের জরুরত’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহযোগিতায় সভা আয়োজন করে জুলাই নেটওয়ার্ক। সভায় দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সংগঠন, সাংস্কৃতিক জোট, পেশাজীবী এবং সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন। শুরুতে জুলাই নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে অধ্যাপক মাসউদুর রহমান স্বাগত বক্তব্য প্রদানপূর্বক অনুষ্ঠান সঞ্চালনা শুরু করেন। ‘জুলাই নেটওয়ার্ক কী, কিভাবে শুরু হয়েছে এবং কারা এর সদস্য’ এই বিষয়ে সংক্ষিপ্তভাবে ধারণা প্রদান করা হয়। সভার উদ্দেশ্য ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন লেখক ও সমাজচিন্তক রিফাত হাসান। এরপর ওমর ফারুক আবির ‘জুলাইয়ের সামাজিক চুক্তি ও জুলাই সনদের জরুরত’ বিষয়ে প্রস্তাবনা পাঠ করেন। সভায় বক্তব্য দেন সালেহ নোমান- সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন, কলি কায়েস সংগঠক, এমপাওয়ারিং আওয়ার ফাইটারস, তৌহিদুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত আহব্বায়ক, স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি (স্যাড), মাইন উদ্দিন জাহেদ কবি ও শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান মামুন-স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মুকাভিনেতা, অধ্যাপক আর রাজী অধ্যাপক, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহিদুল করিম কচি সদস্য সচিব, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব, ইসরাফিল খসরু সদস্য, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), আজিজুল হক ইসলামাবাদী যুগ্ম মহাসচিব, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, মোহাম্মদ ইউসুফ সাধারণ সম্পাদক, গণঅধিকার পরিষদ, চট্টগ্রাম মহানগর, জাবেদ আহমেদ সদস্য, জাতীয় সমন্বয় কমিটি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, প্রকৌশলী মোহাম্মদ লোকমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক সম্পাদক, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), মুক্তিযোদ্ধা জবিউল হাসান সদস্য, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, জুবাইরুল হাসান আরিফ সংগঠক, দক্ষিণাঞ্চল, জাতীয় নাগরিক পার্টি, হাসান মারুফ রুমি সদস্য, রাজনৈতিক পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, এডভোকেট আমির আব্বাস সদস্য সচিব, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, হুজ্জাতুল আবির সংগঠক, চট্টগ্রাম অঞ্চল, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ, নুরুল আফসার মজুমদার স্বপন জেলা সমন্বয়ক, নাগরিক ঐক্য, রিফাত হাসান, কবি ও সমাজ চিন্তক।
আলোচনায় জুলাই অভ্যুত্থানকে বক্তারা রাষ্ট্র পুনর্গঠনের এক ঐতিহাসিক সুযোগ হিসেবে চিহ্নিত করেন। কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গঠনের জন্য জুলাই সনদ প্রণয়ন কতটা অপরিহার্য, তা ব্যাখ্যা করেন। বক্তারা মত দেন, এই সনদে জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের এবং এই অভ্যুত্থানের পেছনে যে গণ আকাক্সক্ষা তার প্রতিফলন থাকতে হবে জুলাই সনদ বা ঘোষণাপত্রে। বক্তাদের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী জুলাই সনদের প্রয়োজনীয়তা: একটি ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে ভ‚মিকা রাখা। রাজনৈতিক ঐক্যের ভিত্তি নির্মাণ। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হওয়া। আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত অবস্থান গড়ে তোলা। সনদে কী থাকতে পারে তা নিয়ে উত্থাপিত গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবসমূহ: জুলাইয়ের শহীদদের স্বীকৃতি। আহতদের পুনর্বাসন ও নিরাপত্তা। অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও প্রেক্ষাপট। নতুন সংবিধান বা জুলাইয়ের সনদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি। সংবিধান এবং রাষ্ট্রে গণআকাক্সক্ষার প্রতিফলন। জনগণের স্বাক্ষরের মাধ্যমে সমর্থন ও গণ স্বীকৃতি। সংবিধান লংঘনের ইমডেমনিটি প্রদান। সকল জাতীসত্ত্বার স্বতন্ত্র পরিচয় ঘোষণা। গণঘৃণা বা গুম খুনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় অবস্থান ঘোষণা। জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাসকে ধর্মভিত্তিক বা নতুন ফ্যাসিবাদী প্রকল্প আকারে হাজির না করা। ট্রæথ এন্ড রিকনসিলিয়েশনের আকাঙ্খা প্রকাশ। সভার সাফল্য ও গুরুত্ব: চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো এক মঞ্চে সকল রাজনৈতিক মত ও দল একত্রিত হয়েছেন। চট্টগ্রামের ইতিহাসে এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। ভিন্ন মত থাকা সত্তে¡ও সকলে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা ও দেশের পুনর্গঠন ও ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক চুক্তির প্রয়োজনীয়তায় সম্মত হন। সভা শেষে জুলাই নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আজকের আলোচনার ভিত্তিতে একটি খসড়া ‘জুলাই সনদ বিষয়ক প্রস্তাবনা’ তৈরি করে তা রাজনৈতিক দলসমূহের মাধ্যমে নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌঁছানো হবে। বিজ্ঞপ্তি