‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ ‘জুলাই শহীদ দিবস’ পালনের নির্দেশ

1

পূর্বদেশ ডেস্ক

জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে পালনের জন্য দেশের সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও কলেজকে নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তর।
এছাড়া জুলাইয়ে কোটা আন্দোলনের সময় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার দিন ১৬ জুলাই ‘জুলাই শহীদ দিবস’ পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার অধিদপ্তর তরফে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্তর্বর্তী সরকার ৫ আগস্টকে সাধারণ ছুটিসহ ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ঘোষণা করেছে। এছাড়া ১৬ জুলাইকে ঘোষণা করা হয়েছে ‘জুলাই শহীদ দিবস’। খবর বিডিনিউজের
বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আলাদা পরিপত্রে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। প্রতিবছর যথাযথ মর্যাদায় দিবসগুলো পালন করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে সেখানে। সেদিনই শিক্ষা মন্ত্রণালয় তার অধীন দপ্তর ও সংস্থাগুলোকে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে চিঠি দেয়।
সে চিঠি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার যথাযথভাবে দিবস পালনে ব্যবস্থা নিতে সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের বলেছে নির্দেশনা দিল অধিদপ্তর।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকার প্রতিবছর ৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস (সাধারণ ছুটিসহ) ঘোষণা করেছে। এ দিবসটিকে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
অপরদিকে, সরকার প্রতিবছর ১৬ জুলাই ‘জুলাই শহীদ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং সে দিবসটিকে ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ সম্প্রতি ঘোষিত ৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পালন না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দিন ৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণা করা হয়। পরে বিভিন্ন পক্ষ থেকে আপত্তি ও প্রতিবাদের মুখে সিদ্ধান্তটি বাতিল করে সরকার।
২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া ছাত্রদের আন্দোলন শেষমেশ সরকার উৎখাতের আন্দোলনে পরিণত হয়। ৩৬ দিনের সেই আন্দোলনে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে চলে যান হন সাড়ে ১৫ বছর ধরে দেশ চালিয়ে আসা শেখ হাসিনা। শুরুতে এই আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পরে তা দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
সরকারের তরফে জবাব ছিল- গুলি, টিয়ারশেল আর লাঠি; এককথায় কেবলই বলপ্রয়োগ। প্রথমে ফেসবুক, পরে ইন্টারনেট বন্ধ করে পরিস্থিতি সামাল দিতে চায় সরকার। তাতে হিতে বিপরীত হয়।
১৬ জুলাই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তাকেই এ আন্দোলনের ‘প্রথম শহীদ’ হিসেবে সম্মান জানানো হয়। আন্দোলনে রক্তপাত শুরু হওয়ার ২০ দিনের মধ্যেই লাশ আর রক্তের বোঝা মাথায় নিয়ে পতন হয় দেড় দশকের আওয়ামী লীগ সরকারের। পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা আর তার অমাত্যরা।
জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের যে তালিকা সরকার গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে, সেখানে শহীদের সংখ্যা ৮৩৪।
তবে অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘ যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হতে পারে বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে।