নিজস্ব প্রতিবেদক
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ওয়ান হেলথ কনসেপ্টকে ধারণ করে সমন্বিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ ওয়ান হেলথ নিয়ে আমরা এখনো লড়াই করছি। আমরা সবসময় মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবি। কিন্তু প্রাণী ও পরিবেশের স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষা করা যাবে না। আমরা জীববৈচিত্র্য, পরিবেশগত স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলি। এটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করে আধুনিকীকরণ বা উন্নয়ন করা উচিত নয়।
গতকাল মঙ্গলবার নগরের চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ১৭তম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জানা গেছে, গত তিন দিন দেশি-বিদেশি প্রায় পাঁচ শতাধিক গবেষকদের পদচারণায় মূখর ছিল সিভাসু প্রাঙ্গণ। সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য ছিল- ‘স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি উন্নয়নে স্থল ও জলজ বাস্তুতন্ত্রের আন্ত:বিষয়ক সমন্বয়’। সম্মেলনে বাংলাদেশ, ভারত, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ শতাধিক গবেষক অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে ৯৭টি মৌখিক উপস্থাপনা এবং ৪৬টি পোস্টার প্রদর্শন করা হয়।
এদিন বিকাল ৪ টায় সিভাসু অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশন। সিভাসু’র উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমানের সভাপতিত্বে অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ওমর ফারুক ইউসুফ। এতে সমাপনী বক্তব্য ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন সম্মেলনের আহŸায়ক এবং সিভাসু’র ওয়ান হেলথ ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. আহসানুল হক।
সমাপনীতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আরও বলেন, ‘এই ধরণের আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে তরুণ গবেষকরা তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ পায়। তিন দিনের এই সম্মেলনে তরুণরা তাদের গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে আজকে যে স্বীকৃতি পেয়েছে তা দেখে আমি অভিভ‚ত হয়েছি। এই সম্মেলন প্রমাণ করে গবেষণার প্রতি দেশের তরুণ সমাজের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই ধরণের গবেষণাধর্মী আয়োজন কার্যকরী ভ‚মিকা রাখবে’।
তিন দিনের টেকনিক্যাল সেশন শেষে কম্বাইন্ড প্লেনারি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিভাসু’র প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য প্রফেসর ড. নীতীশ চন্দ্র দেবনাথ। প্লেনারি সেশনে অংশ নেন যুক্তরাজ্যের প্রখ্যাত ভেটেরিনারি এপিডেমিওলজিস্ট এবং ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আলাসডেয়ার অ্যালেক্স জে কুক, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রখ্যাত নেফ্রোলজিস্ট প্রফেসর ডা. ইমরান বিন ইউনুস, আসাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. প্রোবোধ বোরাহ, ভিয়েতনামের হ্যানয় ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব এডুকেশনের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সন গুয়েন লান হুং এবং বাংলাদেশ ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ডা. শফিউল আহাদ সরদার।
সমাপনী অধিবেশনের শুরুতে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন সিভাসু’র মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ বিভাগের প্রফেসর ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস। সারসংক্ষেপ উপস্থাপনের পর সম্মেলনে সাতজন সেরা মৌখিক উপস্থাপক ও সাতজন সেরা পোস্টার উপস্থাপককে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট বিতরণী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রাশেদুল আলম।











